ঝুঁকি নিয়ে পারপার করলে তার ফল কেমন হতে পারে একটি মোটরবাইকের চেহারা দেখলেই তা বোঝা যাবে। বাউড়িয়া স্টেশনে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে শিউরে উঠেছেন মানুষজন। কারণ ওই মোটরবাইকে দু’জন আরোহী ছিলেন। আর সেই অবস্থাতেই ঝুঁকির পারাপার করা হয়। আর তখনই ওই মোটরবাইকে ধাক্কা দেয় চলন্ত ট্রেন। ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচে গেলেন দুই মোটরবাইক আরোহী। কিন্তু ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায় ওই মোটরবাইক। সেখানে যদি ওই দুই যুবক থাকত তাহলে তাঁদের হাল কেমন হতো! এই কথাটা ভেবেই শিউরে উঠছেন সাধারণ মানুষ। স্টেশনের লেভেল ক্রসিং থেকে কিছুটা দূরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার করার জন্যই এই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
আজ, শুক্রবার দুপুরে এই ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দক্ষিণ–পূর্ব রেলের বাউড়িয়া পশ্চিম রেল গেটের কাছে মোটরবাইকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায় ট্রেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ রেল গেট বন্ধ ছিল। ওই অবস্থাতেই লেভেল ক্রসিংয়ের ৫০ ফুট দূরে একটি জায়গা থেকে দুই যুবক মোটরবাইক নিয়ে রেল লাইন পার করছিলেন। তখন অনেকে তাঁদের সাবধানও করেছিলেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তাড়া আছে বলে বেরিয়ে যান তাঁরা। আর তখনই হাওড়াগামী ট্রেনকে ছুটে আসতে দেখেন তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখন রেললাইনে মোটরবাইক ফেলে পাশেই ঝাঁপ দেন দুই যুবক। ওই ঝাঁপ সঠিক সময় দেন বলেই তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু দুমড়ে মুচড়ে যায় মোটরবাইক।
আরও পড়ুন: কুন্তল ঘোষের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ, সিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর করল আদালত
রেলের পক্ষ থেকে বারবার সচেতন করা হয়, ঝুঁকির পারাপার করবেন না। রেল গেট বন্ধ থাকলে অপেক্ষা করুন। সাধারণ যাত্রীরা রেল ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন—এসব প্রচার বারবার হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করা হয়েছে বারবার। কিন্তু সেই সচেতনতা প্রচারে কেউ কান দেননি। আর তাই এমন ঝুঁকির পারাপার করছিলেন ওই দুই যুবক। সঠিক সময় ঝাঁপ দিতে না পারলে আজ প্রাণটা চলে যেত। এই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেল গেট বন্ধ থাকলেও ওই অংশ দিয়ে মোটরবাইক, গাড়ি ঝুঁকির পারাপার করে। যার ফলে দুর্ঘটনা আজ ঘটল।
দক্ষিণ–পূর্ব রেলের হাওড়া–খড়গপুর শাখায় বাউড়িয়া অত্যন্ত ব্যস্ত স্টেশন। বাউড়িয়া ঘাট থেকে রোজ প্রচুর মানুষ শহরে যাতায়াত করেন। এখান দিয়ে বহু থ্রু ট্রেন যাতায়াত করে। তাই নিরাপদ দূরত্বে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করা হয়। লেভেল ক্রসিং পার করতে অনেক যাত্রীরই দেরি হয়ে যায়। বহুদিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ছিল, উড়ালপুল গড়ে তোলা হোক। রাজ্য সরকার এবং রেলের যৌথ উদ্যোগে উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরুও হয়েছে। কিন্তু তা শেষ না হলে মানুষ ব্যবহার করতে পারবেন না। এই উড়ালপুল গড়ে তুলতে মোট ৮০ কোটি টাকা খরচ হবে। তার মধ্যে ৪০ কোটি টাকা খরচ করবে রেল। আর অ্যাপ্রোচ রোড–সহ বাকি যে পথঘাট তৈরি হবে তার জন্য খরচ করবে রাজ্য সরকার।