টিনের চালের বাড়িতে কোনওভাবে বসবাস করতেন। কিন্তু আবাসের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে সেই বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পাকাপোক্ত করবেন বলেই ভেবেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। সেইমতো তাঁরা ইট-সিমেন্ট কেনার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেই ঘটল বিপত্তি। আবাসের টাকা বিডিও নোটিশ দিয়ে তাঁদের ফেরাতে বললেন। এর ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। ঘটনাটি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার স্বর্ণখালির চক শ্যামনগর গ্রামের। এই নির্দেশের পরেই বৃদ্ধ দম্পতি রঞ্জিত এবং সুচিত্রা বিশ্বাসের মাথায় হাত। কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি করেন বলেই টাকা ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘শ্রমিকদের বদলে JCB দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে’, দিল্লি থেকেই TMC–কে আক্রমণ সুকান্তর
জানা গিয়েছে, বিয়ের পর ছেলেমেয়ে আলাদা হয়ে গিয়েছে। তাঁরা একটি টিনের ছাদের বাড়িতে থাকছিলেন। কোনওভাবে বিড়ি বেঁধে দিন কাটান। ফলে আবাসে বাড়ি পাওয়ার জন্য তাঁরা আবেদন করেছিলেন। সেইমতোই বৃদ্ধ দম্পতির নামে আসে প্রথম কিস্তির টাকা। টাকা পেয়ে তাঁরা বাড়ি তৈরির জন্য ইট, বালি, সিমেন্ট জোগাড়ের প্রস্তুতিও শুরু করে দেন। এছাড়াও বাড়ি তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম কিনে ফেলেছিলেন। ঠিক সেই সময়েই বিডিওর তরফে নোটিশ দিয়ে আবাসের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে তাঁদের। ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য তাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাই অবিলম্বে সেই টাকা ফেরাতে বলেছেন বৃদ্ধ দম্পতিকে।
বৃদ্ধ দম্পতির দাবি, তারা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বলে আবাসের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন টাকা ফেরতের নির্দেশ পেয়ে কার্যত খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন দম্পতি। কারণ আবাসের যে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন সেই টাকা পাওয়ার পর তারা পুরনো টিনের বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন চার হাজার টাকায়। আর আবাসের টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনে ফেলেছিলেন। বিডিওর নির্দেশে বলা হয়েছে টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এফআইআর করা হবে বলো জানানো হয়েছে।
এখন এই নোটিশ পাওয়ার পরে তাঁরা স্বাভাবিকভাবে সমস্যায় পড়েছেন। জানা গিয়েছে, বৃদ্ধের ছেলের পাকা বাড়ি রয়েছে। সেই সূত্রেই বিডিওয়ের তরফে ভুল তথ্য দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বৃদ্ধের দাবি, বিজেপি করার জন্য তিনি প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েছেন। এ বিষয়ে বিডিওর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ দাস বলেছেন, যাঁরা আবাসের সার্ভে করেছিলেন, সেই সরকারি আধিকারিকরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।