অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠার সময় রাস্তার ধারে পড়ে যান ৬৫ বছর বয়সী করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ। উত্তর ২৪ পরগনার এক হাসপাতালের বাইরেই। সাহায্য চেয়ে অকাতরে কাঁদছিলেন তাঁর স্ত্রী। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। ওভাবে রাস্তায় পড়েই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। ঘটনাটি জুলাই মাসের। এমন আরও ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে করোনা আবহে। শুধু সংক্রমণের ভয়ে বেরিয়ে আসছে মানুষের দাঁতনখ।
তার মাঝেও যে মানবিকতা বেঁচে আছে তা মনে করিয়ে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার পুলিশ ও প্রশাসনের ৩ আধিকারিক। এই এলাকার ৪৯ বছর বয়সী এক ওষুধ ব্যবসায়ীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে শালবনির কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করাতে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়। তখন অ্যাম্বুল্যান্সে উঠতে গিয়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
সামনেই ছিলেন ওই করোনা রোগীর পরিবারের লোকজন। ছিলেন আরও অনেকে। কিন্তু সংক্রমিত হতে পারেন এই ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। মিনিট পনেরোর মধ্যে খবর পৌঁছয় চন্দ্রকোনা–২ ব্লকের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ির কাছে। তিনি সময় নষ্ট না করে যুগ্ম বিডিও এবং চন্দ্রকোনা থানার ওসি প্রশান্ত পাঠককে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এর পর তাঁরা তিনজনই পিপিই পরে করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলেন। আর তাঁদের সাহায্য করেন পিপিই পরিহিত অ্যাম্বুল্যান্সের চালক।
করোনা আক্রান্ত ওই ওষুধ ব্যবসায়ীর স্ত্রী তাঁর ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তখন সেখানেই দাঁড়িয়েছিলেন। পরে তিনি বলেন, ‘আমার ২ সন্তান রয়েছে বলে করোনা সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি নেইনি। তবে ওই বিডিও এবং পুলিশ আধিকারিক শেষ মুহূর্তে আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। তাঁরা আমার কাছে দেবতুল্য।’ সম্প্রতি এরকমই আরেক মানবিকতার উদাহরণ দিয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার তৃণমূল নেতা সত্যকাম পট্টনায়েক। অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় তিনি নিজের বাইকে বসিয়েই করোনা উপসর্গযুক্ত এক ব্যক্তিকে পৌঁছে দিয়েছিলেন হাসপাতালে।