চিকিৎসার পেশা ছেড়ে প্রশাসনিক পদে বসেছেন। তারপরেও মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করার নেশা তাঁর কাটেনি। কাজের ফাঁকেই রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। তিনি হলেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বিডিও অরুণ কুমার বিশ্বাস। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। রোগী দেখার পাশাপাশি বিডিও-র দায়িত্বও সামলাচ্ছেন অরুণ কুমার বিশ্বাস। বিডিও-র এই কাজে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় মানুষদের বক্তব্য, 'হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গেলে ভোর থেকেই লম্বা লাইন দিতে হয়। বিডিও চিকিৎসা করছেন জানার পর এখন আমরা তাঁর কাছেই যাচ্ছি।' বিডিও জানান, ২০০২ সালে তার মা হেমালিনী বিশ্বাসের মৃত্যুর পর তিনি সংকল্প করেছিলেন বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা করবেন। সেই কারণেই তিনি বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা করছেন। বিডিও বলেন, 'প্রশাসনিক কাজ সামলে শনি ও রবিবার রোগী দেখবো বলে ঠিক করেছি। তাতে মানুষের যেটুকু উপকার হবে সেটাই আমার কাছে বড় পাওনা।' তাঁর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তারা। ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কেউ অসুস্থ হলে বিডিও তাকে দেখছেন। এর ফলে মানুষ উপকৃত হবেন। বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, 'বিডিও যদি প্রশাসনিক কাজ সামলানোর পর মানুষের পাশে দাঁড়ান তাহলে তো খুবই ভালো উদ্যোগ।'
মালদহের মঙ্গলপুরের বাসিন্দা বিডিও অরুণ কুমার বিশ্বাস ডাক্তারি পাশ করার পর পুরুলিয়ার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমেও কাজ করেছেন। তিনি জানান, চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ছোট থেকেই তাঁর আমলা হওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেই কারণেই তিনি বিডিও হওয়ার জন্য জোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। বিডিও-র বক্তব্য, পরিবার পাশে থাকার কারণে তাঁর পক্ষে এভাবে প্রশাসনিক কাজ সামলানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছে।