রাম বা রহিম হোক- কাউকে ছাড়া হয় না। সন্দেশখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে এমনই মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বসিরহাটের জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, আপনি একজনকে (বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র) ফোন করছেন। আর সবাইকে শোনাচ্ছেন। পুরো শিখিয়ে দিয়ে। কতজনের খোঁজ নেন? আপনার আমলে ভারতবর্ষে মেয়েদের উপরে সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে। আমাদের এখানে যদি এক-দুটো ঘটনা যদিও বা ঘটে, আমরা সঙ্গে-সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। সে যেই হোক - রামই হোক বা রহিমই হোক। কেষ্টই হোক বা বিষ্টুই হোক- আমরা কাউকে ছেড়ে কথা বলি না। আমরা অ্যাকশন নিই।’
কেন বিশেষ করে ‘রাম-রহিম’ বললেন মমতা?
রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতা যে 'রাম বা রহিম'-র কথা বলেছেন, সেটা বিজেপি আক্রমণের প্রেক্ষিতে বলেছেন। কারণ সন্দেশখালি কাণ্ডের পর থেকেই মোদী-সহ পদ্মশিবিরের নেতারা একটা প্রশ্ন ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন যে নামটা শাহজাহান বলেই কি তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মমতারা? সেই প্রশ্নের সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় তোষামোদের অভিযোগ তুলেছিলেন। দুই এবং দুইয়ে মিলিয়ে চার করার বিষয়টি বাকিদের উপর ছেড়ে দিচ্ছিলেন।
চলতি মাসের শুরুতেই একটি জনসভা থেকে মোদী বলেছিলেন, ‘সন্দেশখালিতে আমাদের দলিত বোনেদের উপর এত বড় অপরাধ হল। পুরো দেশ কঠোর শাস্তির দাবি তুলছে। কিন্তু তৃণমূল সরকার দোষীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল। আমি আজ তৃণমূল সরকারের থেকে জানতে চাই যে দোষীর নামটা শেখ শাহজাহান বলেই সেই কাজটা করা হচ্ছে?’
মাছের ভেড়ি নিয়ে মমতা
বসিরহাটের সভা থেকে মাছের ভেড়ি নিয়েও বার্তা দেন মমতা। যা সন্দেশখালির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। কারণ শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে মাছের ভেড়ি জবরদখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেক্ষেত্রে সরাসরি শাহজাহানের নাম না নিলেও মমতা স্বীকার করে নেন যে অনেকের মাছের ভেড়ি ‘দখল’ করে নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে সন্দেশখালিতে যাবেন। কারও কোনও সমস্যা থাকলে তাঁকে সরাসরি চিঠি লিখতেও বলেন।
মমতা বলেন, ‘আপনাদের এখানে অনেক ভেড়ি আছে। অনেক ভেড়ি আছে, অনেকে দখল করে। আবার ছোট-ছোট ভেড়ি আছে গরিব মানুষের, তাঁরা করে খান।’ সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, তাঁর সরকার ভেড়ি নিয়ে নীতি তৈরি করছে। যা স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনও সরকার করেনি। যাঁর ভেড়ি, তিনিই চাষ করবেন। নাহলে স্বনির্ভর গোষ্ঠী চাষ করবে। আর সরকারের রেকর্ডে নাম রাখতে হবে। কারও ভেড়ি জোর করে কেড়ে নেওয়া যাবে না। আর সেজন্য সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে ‘রেভিনিউ’ দিতে হবে। তাহলে আসল মালিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে জানিয়েছেন মমতা।