পশ্চিম বর্ধমানের সফরসূচিতে এই কর্মসূচি ছিলই না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই হঠাৎ তাঁর ডাক পেয়ে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন দুর্গাপুর পুরনিগমের প্রত্যেক কাউন্সিলর। মুখ্যমন্ত্রী তলব করা মাত্রই বুধবার সকালে তড়িঘড়ি তাঁরা হাজির হন ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনে। ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, জেলার শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়াল–সহ সমস্ত কাউন্সিলর। বৈঠকে সকলকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ভুলে উন্নয়নের কাজ করে যেতে হবে।
সভায় উপস্থিত প্রত্যেককে নির্দিষ্ট কিছু কাজ, দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসানসোল–দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং দুর্গাপুর নগর নিগমকে দুর্গাপুরের উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে মমতা। আলো, জল, রাস্তা, নিকাশি নিয়ে যে সমস্যাগুলি দেখা দিচ্ছে তা দ্রুত সমাধান করে ফেলতে বলা হয়েছে। দুর্গাপুরের প্রাক্তন মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বর্তমান মেয়র দিলীপ অগস্তির যে বিরোধ রয়েছে সে ব্যাপারে অবগত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বর্তমান মেয়রকে ফোনে কথা বলে পুরনো দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
৫টি করে ছোট ছোট কাজ প্রত্যেক কাউন্সিলরকে দিয়ে করিয়ে নিতে দিলীপ অগস্তিকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। কোনও বড় কাজ থাকলে সেই তালিকা তৈরি করে সেটি মলয় ঘটকের মাধ্যমে তাঁর হাতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কাউন্সিলরদের উদ্দেশে এদিন বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে সিপিএমের হাতে মার খেয়ে খেয়ে কোমর, হাত ভেঙে গিয়েছে। এখন যারা ছোট তারা এ সব জানে না। তোমরা একসঙ্গে কাজ কর।’ যা সব সমস্যা রয়েছে তা আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলার কথা এদিন বলেছেন মমতা।
স্থানীয় কারখানাগুলিতে যাতে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হয় সে ব্যাপারে নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুর নগর নিগমে ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য কাজ দ্রুত করে দিতে হবে বলে এদিন তিনি জানান। এদিনের বৈঠকে উল্লেখযোগ্যভাবে অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বোরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে তিনি জানিয়েছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় এদিন তিনি জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। এদিন কাউন্সিলরদের সঙ্গে ১৫ মিনিটের বৈঠক শেষে ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গন থেকেই হেলিকপ্টারে করে বনগাঁর দিকে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।