ব্যাঘ্র আতঙ্ক বাংলাকে কিছুতেই ছাড়ছে না। দিনে–রাতে যখন তখন দক্ষিণরায়ের আসা যাওয়া লেগেই রয়েছে। কখনও তার পদচিহ্ন, আবার কখনও ট্র্যাপ ক্যামেরায় তার মুখ দেখতে পাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন গ্রামবাসী থেকে বন দফতরের কর্মীরা। এবার আবার বাঘের উপস্থিতি মিলেছে বেলপাহাড়িতে। একদা মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা এখন বাঘের আতঙ্কে কাঁপছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই মাইকিং শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের একা জঙ্গলে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে বন দফতরের পক্ষ থেকে। সুতরাং ব্যাঘ্র আতঙ্ক চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।
২০২৪ সালের শেষে বাংলার পশ্চিমাঞ্চলে ঢুকে পড়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। টানা ১০ দিন চাপে রেখেছিল গ্রামবাসী থেকে শুরু করে বন দফতরের কর্মীদের। বাঘিনি জিনাত যে দৌড় করিয়েছিল তা ভোলেনি বন দফতর। কিন্তু তারপরও বারবার ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলায় ঢুকে পড়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এবার কদিন ধরে পুরুলিয়া সীমান্তে থাকা একটি বাঘ চারিদিকে ঘোরাফেরা করছে। সেটাই বেলপাহাড়িতে ঢুকে পড়েছে কিনা তা নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এখানের গ্রামবাসীরা তা টের পেয়ে বন দফতরে খবর দেন। সেই খবরের উপর ভিত্তি করে খোঁজ করতেই সত্যতা বুঝতে পারে বন দফতর।
আরও পড়ুন: বাস চালকদের জন্য আসছে অ্যাপ, বড় সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার
এদিকে বন দফতর সূত্রে খবর, গতকাল বেলপাহাড়ির কয়েকটি এলাকায় নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছে বন দফতর। গ্রামবাসীদের খবর যে এভাবে মিলে যাবে তা ভাবতেও পারেননি বন দফতরের কর্মীরা। তাই তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আপাতত গ্রামবাসীদের একা জঙ্গলে যেতে নিষেধ করছেন বন দফতরের কর্মীরা। বন দফতরের এই সতর্কবার্তায় আরও আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। বন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘বাঘিনি জিনাতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তাই আমরা আগাম সতর্ক করেছি। নিজেরাও সতর্ক রয়েছি। তার জন্যই মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে।’
অন্যদিকে বাংলায় বারবার ভিন রাজ্যের বাঘ ঢুকে পড়ার জন্য কদিন আগেই নাম না করে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘বাঘ কেন পালিয়ে আসে রোজ রোজ? তোমার বাঘ তুমি সামলাতে পারছো না কেন? ওরা নিশ্চয়ই বাঘকে ঠিক মতো খেতে দেয় না। তাই তো বাঘ পালিয়ে আসে। আর আমাদের গ্রামের মানুষজনরা ভয়ে কাঁপে। আর যেই ধরা হল, ওমনি ওরা ফোন করে বলতে থাকে, ফেরত দাও ফেরত দাও। ফেরত নেওয়ার জন্য লাফালাফি করে। এবার বাঘ এলে ওদের বলবে, তোমাদের লোক পাঠাও।’