বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ‘টিম অমিত শাহ’কে এখানে নামানো হলেও দলের অন্দরে কোন্দল মেটানো হয়নি। আর রাজ্যে সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসে তা হাড়েহাড়ে টের পেলেন বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ‘ত্রিপুরা–জয়ী’ সুনীল দেওধর উলুবেড়িয়ার একটি রিসর্টে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া, হুগলির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। দেওধর ওই চার জেলার নেতাদের প্রত্যেকের বক্তব্য শোনেন এবং লিখে নেন। ওই নেতারা তাঁদের কিছু ক্ষোভের কথাও দেওধরকে জানান। আর সেখানেই ওঠে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি’র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। তিনি অবশ্য সাংবাদিকদের কাছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন হলে নেতৃত্বের রদবদল হতে পারে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
দলীয় সূত্রের খবর, কলকাতায় সাংগঠনিক বৈঠকে কৈলাস রাজ্য নেতাদের বলে দেন, বিধানসভা ভোটের প্রার্থী ঠিক করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটকে টার্গেট করে চারটি সাংগঠনিক জোনে বৈঠক শুরু করেছেন চার কেন্দ্রীয় নেতা দেওধর, বিনোদ তাওড়ে, বিনোদ সোনকার এবং দুষ্যন্ত গৌতম। তাওড়ে নবদ্বীপ, সোনকার রাঢ়বঙ্গ এবং গৌতম কলকাতা জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত হরিশ দ্বিবেদী অবশ্য এদিন আসেননি।
দিলীপবাবু জানান, ভোটযুদ্ধে সাফল্য পেতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও প্রতি মাসেই আসবেন। তবে তাঁদের সফরসূচি এখনও জানা যায়নি। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তাদের প্রায় সব সাংগঠনিক জেলায় এবং ফেব্রুয়ারির গোড়াতে প্রায় সব বিধানসভা কেন্দ্রে একজন করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে সমীক্ষাও করাচ্ছে বিজেপি। সেই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বিধানসভা ভোটের রণকৌশল ঠিক করবেন শাহরা।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বির বিজেপি সাংসদ সোনকার ও দলের রাজ্য সহ–সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূম জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বলা হয়েছে, ওই জেলাগুলি থেকে মোট ৫৭টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫০টিতে জিততে হবে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকার আটটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটিতে জেতে বিজেপি।