আবার ‘বেসুরো’ বিজেপির গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়। গঙ্গারামপুর বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০২১ সালের আগে সত্যেনবাবু তৃণমূল কংগ্রেসই ছিলেন। তারপর বিজেপিতে আসেন। কিন্তু এখন পদ্মপার্টিতে তাঁর মোহভঙ্গ হতে শুরু করেছে। যার জেরে তিনি এখন পার্টির নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। আর এখন সংগঠনে দরকার নতুন নেতা যিনি শক্তিশালী বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এখনও বিজেপির রাজ্য সভাপতি ঠিক হয়নি বাংলায়। তার আগে এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এতে রাজ্য–বিজেপির অস্বস্তি বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। তার আগে সংগঠন ঢেলে সাজাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল। বুথ সভাপতি এবং মন্ডল সভাপতি নির্বাচনও আছে বাংলায়। এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ সংগঠনের নির্বাচন। সেখানে বিজেপির গঙ্গারামপুর বিধানসভার বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এখন নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসার আদর্শ সময়, অনেক আগে এটা ঘটছে বলে মনে হতে পারে। তবে সময় নিয়ে তা করা দরকার। কিন্তু বিধায়ক এবং মন্ডল সভাপতিরা উদ্বিগ্ন কখন এটা ঘটবে।’ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সঠিক নেতা এমন একজনের হওয়া দরকার যিনি সংগঠনকে ভাল মতো বোঝেন। এটাও তাঁর মত।
আরও পড়ুন: প্রণামী বাক্স ভেঙে টাকা–কড়ি হাতিয়ে চম্পট দিঘায়, পুরনো জগন্নাথ মন্দিরের ঘটনায় আলোড়ন
অন্যদিকে বিজেপির সংগঠন যে বাংলায় তলানিতে পৌঁছেছে সেটা প্রত্যেকটি নির্বাচনে গোহারা হওয়ার পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। একুশের নির্বাচনে বিজেপি বিধায়ক সংখ্যা হয় ৭৭। যা এখন ৬৬’তে নেমেছে। তারপর থেকে পুরসভা, পঞ্চায়েত, লোকসভা এবং উপনির্বাচনগুলিতেও গোহারা হয়েছে বিজেপি। এই আবহে গঙ্গারামপুর বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বক্তব্য, ‘আমি মনে করি না দলে প্রত্যেক নেতাই সংগঠন ভাল করে বোঝেন। সঠিক নেতার সেই ক্ষমতা থাকা উচিত যাতে সংগঠন শক্তিশালী হয় এবং আরও মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে যোগ দেয়। এমন কোনও ব্যক্তি যদি নিয়োগ হয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে আমরা জিতব।’
এছাড়া এই বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। যিনি এখন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী। সেখানের বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়কের দলের বিরুদ্ধে এমন চড়া সুর বেশ বেমানান। তিনি কি আবার ফুল বদল করবেন? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। যদিও তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বরং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া দরকার যাতে বঙ্গ–বিজেপির সাহায্য হয় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করা যায় বলে তাঁর মত। বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের কথায়, ‘আমি দলের দুই নেতা সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীকে বলে দিয়েছি একেবারে নীচুস্তরে কাজ না করলে বিজেপি জেতার জায়গায় আসবে না।’