গঙ্গাসাগর মেলা 'কুম্ভ মেলার থেকেও বড় মেলা'। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলার এই মেলাকে জাতীয়স্তরের মেলার স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার এই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
তিনি বলেন, কুম্ভ মেলার আয়োজন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার হাজার-হাজার কোটি টাকা দেয়। কিন্তু, গঙ্গাসাগর মেলার সমস্ত বন্দোবস্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেই করতে হয়। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থলে কপিল মুনির মন্দির ও আশ্রম লাগোয়া স্থানে এই মেলা বসে।
বৃহস্পতিবার আউট্রাম ঘাট থেকে মেলার ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে মমতা বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে আমরা লাগাতার চেষ্টা করে চলেছি। যাতে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য জাতীয়স্তরের স্বীকৃতি লাভ করা যায়।’
এই প্রসঙ্গেই কুম্ভ মেলা ও গঙ্গাসাগর মেলার সঙ্গে তুলনা টেনে আনেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতার কথায়, 'এটা কুম্ভ মেলার থেকে কম কিছু নয়। বরং, এটা কুম্ভ মেলার থেকেও বড়!'
মমতা বলেন, গঙ্গাসাগর মেলার পরিসর এতটাই বিস্তৃত যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এই মেলায় আসেন। তাঁদের সকলের সুবিধার্থে বহু ভাষায় মেলায় ঘোষণা করতে হয়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, কুম্ভ মেলায় পৌঁছানো অনেক সহজ। কারণ, সড়কপথ, বিমান এবং রেলে সেখানে যাওয়া যায়। কিন্তু, সাগরের এই মেলায় পৌঁছানো খুবই কঠিন। কলকাতা থেকে সেখানকার দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। এর জন্য পুণ্যার্থীদের ফেরি করে নদী পেরোতে হয়।
মমতা এই প্রসঙ্গে জানান, 'আপনারা যদি যাতায়াত সংক্রান্ত প্রতিকূলতা বিচার করেন, তাহলে দেখবেন, কুম্ভ মেলার তুলনায় গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছানো অনেক কঠিন।'
তিনি জানান, শুধু মুড়িগঙ্গা নদী পেরোলেই হবে না। তারপর আবার সড়কপথে আরও ৩০ কিলোমিটার যেতে হবে।
মমতা জানান, এই নদী পারাপারের জন্য গঙ্গাসাগরে ৩২টি ভেসেল এবং ১০০টি মোটরচালিত লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেগুলির মাধ্যমে প্রতিদিন ২০ ঘণ্টা করে পরিষেবা বজায় রাখা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা তথ্য অনুসারে, তীর্থযাত্রীদের নিয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ৪,০০০-৫,০০০ বাস এসে পৌঁছয়। মেলা চলাকালীন যাতে কোনও সমস্য়া তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও প্রশাসনের পাশাপাশি বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।
এবছর মেলা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার অর্থাৎ - ৯ জানুয়ারি (২০২৫) থেকে। মেলা চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই পুরো সময়টা জুড়ে মেলা প্রাঙ্গনে সমস্ত পরিষেবা ও সুবিধা অক্ষুণ্ণ রাখতে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে এই এনজিও-গুলি।