রাজ্যের সরকারি চিকিৎসক ও নার্সের আকাল ক্রমশ বাড়ছে। তা কাটাতে অবসরের পর সরকারি চিকিৎসক ও নার্সদের আরও দু’বছর কাজে রাখার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন : ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পে এক লাখ নবীনকে ব্যবসায় অর্থ সাহায্য ঘোষণা মমতার
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে বিভিন্ন সার্ভিস মিলিয়ে রাজ্যের হাতে মাত্র ১২,৫০০-এর মতো চিকিৎসক রয়েছেন। যা অনুমোদিত পদের তুলনায় অনেকটা কম। শূন্যপদের সংখ্যা কয়েক হাজার তো হবেই। নার্সিং সার্ভিসের ক্ষেত্রেও ছবিটা এক। যেখানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৫৩,৭১২, সেখানে রাজ্যের হাতে রয়েছেন ৪৪,১৭১ জন।
আরও পড়ুন : West Bengal Government Jobs: ভোটের মুখে প্রায় ২০০০ শূন্যপদে নিয়োগ রাজ্যের
মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে এই আকাল মেটানোর আর্জি জানান জনপ্রতিনিধিরা। তার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অবসরের বয়স পার হলেও সরকারি চিকিৎসক ও নার্সদের আরও দু’বছর কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে মূল শর্ত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের যোগ্য ও শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে।
আরও পড়ুন : West Bengal Government Jobs: লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ করছে PSC
বর্তমানে হেলথ সার্ভিস চিকিৎসকের অবসরের বয়স ৬২। মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিস চিকিৎসকের অবসরের বয়স ৬৫। অন্যদিকে, নার্সিং সার্ভিসে যাঁরা যুক্ত তাঁদের অবসরের বয়স ৬২। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর তা দু'বছর করে বাড়তে চলেছে। তবে বাধ্যতামূলকভাবে সব চিকিৎসক ও নার্সদের যে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, তা নয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইচ্ছুকদের ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র এই নয়া নিয়ম প্রয়োজ্য হবে। স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারকে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন : সুবর্ণ সুযোগ! ২০৪ শূন্যপদে নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আগামী এক বছর বিভিন্নে সার্ভিসের যে চিকিৎসক ও নার্সরা অবসর নেবেন, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ইতিমধ্যে তৈরি করা আছে। সেই অনুযায়ী আগামী এক বছরে ২৩০ জন সরকারি চিকিৎসক ও ২৮০ জন নার্সিং কর্মী অবসর নেবেন। ফলে প্রকল্প রূপায়ণে কোনও জটিলতা তৈরি হবে না। কিন্তু সিনিয়র চিকিৎসকের মতে, সমস্যাটা অন্য জায়গায়। তাঁদের মতে, বিনামূল্যের চিকিৎসা পরিষেবা চালু হওয়ার পর সরকারি হাসপাতালগুলিতে কাজের চাপ প্রবল বেড়েছে। তারইমধ্যে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। কাজের অত্যধিক চাপে তাঁরা রীতিমতো অবসরের দিন গুনছেন। তাঁরা আদৌও বাড়তি চাকরি করতে ইচ্ছুক হবেন না কিনা, তা নিয়েই সন্ধিহান চিকিৎসক মহল। ফলে চিকিৎসক ও নার্সদের আকাল মেটানোর জন্য প্রকল্প চালু করা হলেও তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে ধন্দে তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, যে চিকিৎসক ও নার্সদের অনেকদিন কর্মজীবন পড়ে রয়েছে, এই প্রকল্পের জেরে তাঁদের পদোন্নতি আটকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা একাংশের।