স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে বকেয়া বিল ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ১৩০ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে রাজ্য। তার জেরে এই প্রকল্পে পরিষেবা দিতে চাইছে না বেসরকারি হাসপাতালগুলি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শহরের ১৬ টি বেসরকারি হাসপাতাল এই পরিমাণ টাকা বকেয়া রেখেছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠন চিঠি দিয়েছে রাজ্যকে। তাদের বক্তব্য, এভাবে বিল বকেয়া রাখা হলে স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে তাদের পক্ষে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। আর এরপরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। অন্যদিকে, এই চিঠি পাওয়ার পরেই স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম দ্রুত এই সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার গত বছরের নভেম্বর শেষবার স্বাস্থ্যসাথীর বিল মিটিয়েছিল। হাসপাতালগুলির ওই অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটাল ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার (এএইচইআই) চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, প্রচুর পরিমাণে টাকা রাজ্য সরকারের কাছে আটকে রয়েছে। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছিল রোগীর চিকিৎসার ২০ দিনের মধ্যে বিল মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু, তা মেটানো হয়নি। তাদের বক্তব্যজ করোনা পরিস্থিতির পর চিকিৎসার খরচ বেড়েছে। এই অবস্থায় এত টাকা বকেয়া রাখলে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগীদের এই কার্ডের সুবিধা দিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। তাছাড়া, যে সমস্ত সংস্থা হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করে থাকে, তাদের কাছেও বেসরকারি হাসপাতালগুলির কোটি-কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ফলে বকেয়া না মেটালে তাদের পক্ষে আর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, ‘বেসরকারি হাসপাতালের টাকা মেটানোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই অর্থ দফতর এই টাকা মেটানোর অনুমোদন দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে দ্রুতই তারা টাকা পেয়ে যাবেন।’ এই নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি চিকিৎসক তথা বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ‘এরকম যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে তা খুবই খারাপ। দরিদ্র মানুষদের পক্ষে বেশি খরচে বাইরে অপারেশন করা সম্ভব হবে না। একদিকে আয়ুষ্মান ভারতকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথীতে সমস্ত মানুষ চিকিৎসা পাবে। তাহলে এটা তো প্রতারণা করা হল।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব হাসপাতালগুলিকে দ্রুত টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, ‘এতদিন একটু প্রক্রিয়াতে দেরি হয়েছিল। তবে সেগুলি সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত তাদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।’