আমফান তাণ্ডবে রাজ্যের পাশাপাশি তছনছ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। উপড়ে পড়েছিল গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। সেই ধ্বংসলীলা থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ঢাল তৈরি করছে রাজ্য সরকার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবারেও। সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গোসাবা, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ডহারবার, বাসন্তী, ঝড়খালি-সহ সমস্ত তীরবর্তী এলাকাগুলোর কথা মাথায় রেখে আগাম প্রস্তুতি ঢেলে সাজাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। একইসঙ্গে মৎসজীবী ও সামুদ্রিক জাহাজগুলোকে সতর্ক করার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে উপকূলক্ষী বাহিনী।
এছাড়াও পুলিশ, উপকূলরক্ষী বাহিনী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ছাড়াও গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, এসডিও, বিডিওদের ঝড় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও জলসম্পদ প্রকল্প (পিএইচই)’র মাধ্যমে ২ লাখ জলের পাউচ তৈরি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সাগর, কাকদ্বীপ, গোসাবা, ডায়মন্ডহারবার, মথুরাপুর অঞ্চলে ক্যুইক রেসপন্স টিম, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে (এনডিআরএফ) তৈরি রাখা হয়েছে। বিদ্যুত্ ব্যবস্থা যাতে দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, তাই ৫০,০০০ বিদ্যুতের খুঁটি আগাম মজুত রাখা হয়েছে। ঝড়ের সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, সেজন্য ২০টি স্যাটেলাইট ফোনে রাখা হবে হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হবে ২৫টি ড্রোন। শুধু তাই নয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখতে সংস্থাগুলির সঙ্গে আগাম বৈঠক করছে রাজ্য। জেলা থেকে যেকোনও সাহায্যের জন্য মহকুমা স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে গ্রামাঞ্চলগুলোতে আগেভাগে ত্রিপল, সাবান, চাল, ডাল, বেবিফুড পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলোয় দুর্গতদের জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিন লাখ মানুষ যাতে একত্রে থাকতে পারেন সেজন্য, ১১৫টি আয়লা সেন্টার ও ২৫০টি আইসিডিএস সেন্টার ছাড়াও স্কুল-কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে। এমনকী, যদি কেউ আহত হন তার জন্যেও ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার হাসপাতালগুলোতে শয্যা বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধও মজুত করা হয়েছে। এমনকী, সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।