বিগত দিনে জঙ্গলমহলের বিরাট অংশ ছিল মাও অধ্যুষিত। তবে সেসব আজ অতীত। আজ মাওবাদীদের সেই আতঙ্ক আর নেই জঙ্গলমহলে। মাও দমনে কতটা সফল রাজ্য পুলিশ সেকথাই জানালেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার সহ পদস্থ পুলিশ কর্তারা শনিবার উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামে। ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছিল মাওবাদী জঙ্গিরা। ভয়াবহ হামলা। তাতে শহিদ হয়েছিলেন ২৪জন ইএফআর জওয়ান। মাওবাদীরা পুলিশের অস্ত্র লুঠ করে পালিয়েছিল। ভয়াবহ মাও হামলায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। বাম জমানার একেবারে শেষ দিকে এই ঘটনা। তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটাকে শহিদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়। শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিতে নানা অনুষ্ঠান করা হয়। গান স্যালুট দিয়ে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে জওয়ানরা যেভাবে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন সেকথা জানান পুলিশ কর্তারা।
জঙ্গলমহল আজ মাও মুক্ত। একটা সময় ছিল যখন জঙ্গলমহলের নাম শুনলেই শিউরে উঠতেন অনেকে। অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়াত মাওবাদী জঙ্গিরা। একের পর এক নাশকতার ছক কষত। সাধারণ মানুষেরও প্রাণ যেত। তবে সেসব আজ অতীত।
ডিজিপি রাজীব কুমার সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, সোসাইটি, আমাদের যে লোকজন সবার কৃতিত্ব রয়েছে। আমরা মাও মুক্তিতে ভারতের মধ্য়ে দ্বিতীয়। অন্ধ্রপ্রদেশ ১০-১২ বছর সময় নিয়েছে। আমাদের ৭-৮ বছর সময় লেগেছে। আমাদের ৮৮জন বলিদান হয়েছেন। আজকের দিন আমাদের গভীর শোকের। আমাদের প্রতিজ্ঞা নেওয়ার দিন আজ। ওরা বলিদান করেছেন সমাজকে সুরক্ষিত রাখার জন্য। ওঁদের সেই আদর্শে যেন আমরা কাজ করতে পারি, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারি। এখানকার লোকজনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেব আমরা। আমরা সেই সময় আসতাম, এখানকার মানুষ সহায়তা করেছে। সেকারণে আমরা মাওমুক্ত করতে পেরেছি। শুধু ফোর্স দিয়ে হয় না। ৫ হাজার জুনিয়র কনস্টেবল নেওয়া হয়েছে। যত কম সময়ে আমরা মাও মুক্ত করতে পেরেছি, অন্য কোনও রাজ্যে এটা হয়নি। আশা করছি এটাও ওরা পারবে।
এদিকে এক শহিদ পুলিশকর্মীর স্ত্রী রীতা থাপা বলেন, আমার স্বামী শহিদ হয়েছেন। আমি আমার জীবনসঙ্গীকে হারিয়েছি। মেয়েকে চাকরি দিয়েছে। সেটা পেতেও অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেই সময় যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সবটা দেয়নি।