সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছেছিলেন। এবার সেই সেঞ্চুরির মুখে দাঁড়িয়ে জীবনের ময়দানে চালিয়ে খেলছেন ভবতারিনী সামন্ত। ১০০ বছর ছুঁতে আর একমাস বাকি। করোনাভাইরাসকে তুড়ি মেরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন ভবতারিণী। তাঁর মনের জোর দেখে চিকিৎসক এবং পরিবারের সদস্যরা বিস্মিত। এখন সেঞ্চুরি পূরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। পাশাপাশি তাঁরা খুশি তিনি করোনা–জয়ী হওয়ায়।
জানা গিয়েছে, বাগনানের ভবতারিণী সামন্ত মেয়ের বাড়িতে থাকেন। হাড়োপ গ্রামে। এখানেই তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন। তবে করোনা তাঁকে কাবু করতে পারেনি। গত ২৪ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ফুলেশ্বর এলাকার কোভিড হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে যখন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা জান কবুল লড়াই করছেন, তখন একশো বছরের ভবতারিণীর মনের জোর তাঁদেরকেও উৎসাহ দেয়।
ভবতারিণী দেবীকে শনিবার ওই হাসপাতালের কর্মী ও চিকিৎসকরা ফুল, মিষ্টি ও শাড়ি দিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কারণ তাঁর মনের জোরই করোনাকে পরাজিত করেছে। হাসপাতালের অধিকর্তা শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘তাঁর শরীরে নানা সমস্যা ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিতে থাকেন। আমরা কোভিড–১৯ থেকে তাঁকে মুক্ত করতে পেরেছি। তিনি এখন শতায়ুর পথে।’
ভবতারিণী দেবীর নাতি অরূপকুমার ঘোড়াই বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর দিদিমা ভালো আছেন। অরূপের দাদা অপূর্বের ওষুধের দোকান। সেখান থেকেই সম্ভবত অরূপ করোনা আক্রান্ত হন। তারপর আক্রান্ত হন তাঁর মা। ভবতারিণীর জ্বর আসে ও গায়ে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। তাঁর হার্টের সমস্যা ছিল। ঝুঁকি না নিয়ে তাঁর লালারসের পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর হাসপাতালে ভরতি করিয়ে দেন বাড়ির লোকজন।
অরূপের কথায়, ‘চিকিৎসকরা অসাধ্য কাজ করেছেন। এত বয়সে দিদিমা করোনা জয় করে বাড়ি ফেরায় পরিবারের সবাই দারুণ খুশি।’ এত বেশি বয়সের জন্যই তাঁর চিকিৎসা যথেষ্টই ঝুঁকির এবং চ্যালেঞ্জের ছিল। শেষপর্যন্ত তাঁকে সারিয়ে তুলতে পেরে হাসপাতালের সব কর্মীই উৎসাহিত।