এভারেস্টের শিখর ছুঁয়ে ফেললেন বঙ্গ তনয়া। তাও আবার অক্সিজেন ছাড়াই। চন্দননগরের বাসিন্দা পিয়ালি বসাক আজ ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এভারেস্ট জয় করেন। সাধারণত ৮ হাজার ফুট উচ্চতায় বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই কম থাকে। তাছাড়া এভারেস্টের মতো জায়গায় তুষারঝড়ে নিশ্বাস নেওয়াটাও কষ্টকর। সেই পরিবেশের মধ্যেও মধ্যে অক্সিজেন ছাড়াই যেভাবে পিয়ালি যেভাবে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছতে পেরেছেন তাতে অবাক করেছেন সকলকেই। শুধু বাংলা নয়, দেশের কোনও মহিলা পর্বতারোহী এর আগে অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্টের শিখরে পৌঁছননি বলেই মনে করছেন পর্বতারোহীরা।
তাঁর এভারেস্ট জয়ের খবর পেয়ে তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের বাড়িতে কার্যত উৎসবের মেজাজ। বাঙালি অন্যান্য পর্বতারোহীরাও তাঁর প্রশংসা করছেন। এ বিষয়ে পর্বতারোহী নীলাঞ্জন রায় চৌধুরী জানান, পিয়ালির পর্বতারোহণ শুধু বাংলা নয়, ভারতীয় মহিলা পর্বতারোহীদের কাছেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এর আগেও এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করেছিলেন পিয়ালি। কিন্তু, সেই সময় ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় আর তাঁকে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়নি। গতকাল সন্ধে সাতটা নাগাদ সামিট মার্চ করে আজ সকালে ভারতীয় সময় সাড়ে আটটায় এবং নেপালি সময় নটার সময় তিনি এভারেস্টের শিখরে পৌঁছে যান। সরকারি সাহায্য ছাড়াই তিনি এবার এভারেস্ট জয় করেছেন।
উল্লেখ্য, পিয়ালি গত অক্টোবর মাসে ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করেছিলেন। অক্সিজেন ছাড়া দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে তিনি ওই শৃঙ্গ জয় করেছিলেন। তার সাত মাসের মধ্যেই এভারেস্ট জয় করে কৃতিত্ব অর্জন করলেন চন্দননগরের এই কন্যা। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এভারেস্ট জয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু, আর্থিক সমস্যার কারণে তা করতে পারেননি। একসময় নিজের বাড়ি বন্ধক দিয়ে যাবতীয় সঞ্চয় একত্র করে ১৮ লক্ষ টাকা জোগাড় করেন। কিন্তু, এভারেস্ট অভিযানের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দরকার ছিল। নেপাল সরকার জানিয়ে দিয়েছিল এই পরিমাণ টাকা না পেলে এভারেস্টে অভিযান করতে দেওয়া হবে না। তখন সোশ্যাল মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য চেয়ে তিনি আবেদন জানান। তারপর ৫ লক্ষ টাকা ওঠে। কিন্তু, আরও ১২ লক্ষ টাকার দরকার ছিল। তখন তাঁর এজেন্সি তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসে।