প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে পূণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ির জেরে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জন তীর্থযাত্রীর। তাঁদের মধ্যে একজন আছেন কলকাতার বৃদ্ধা। জানা গেল, মৃতদের মধ্যে আছেন একজন মেদিনীপুরের শালবনির বাসিন্দাও। মৃতার নাম ঊর্মিলা ভুঁইয়া। তঁর বয়স ছিল ৭৮ বছর। রিপোর্ট অনুযায়ী, মেয়ে এবং জামাইের সঙ্গে পূণ্যস্নানের সাধ পূরণ করতে প্রয়াগরাজ গিয়েছিলেন ঊর্মিলাদেবী। তবে স্নানের আগেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি থানার গোদাপিয়াসাল কাছারি রোডে। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের সাহায্যে বৃহস্পতিবার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর দেহ আনা হবে খড়গপুর শহরে। (আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র-গুজবের তত্ত্বের পাশাপাশি ওঠে গুরুতর অভিযোগ, মহাকুম্ভে বড় পদক্ষেপ যোগীর)
আরও পড়ুন: খলিস্তানি নেতা নিজ্জর খুনে ভারত যোগের নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ নেই: কানাডার রিপোর্ট
এই নিয়ে ঊর্মিলার পৌত্র অভিজিৎ মাইতি বলেন, '‘মা-বাবা, মেসো, মাসি, দিদা, ঠাকুমা, মামিমা এবং আমার এক বোন সোমবার বিকেলে খড়গপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে করে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার ওঁরা প্রয়াগরাজ স্টেশন থেকে নেমে, হেঁটে পৌঁছে গিয়েছিলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমে। রাতে সেখানেই ছিলেন। আর ভোরে পুণ্য স্নানে বেরিয়ে এই কাণ্ড। বুধবার দুপুরে আমরা ফোনে এই খবর পাই।' (আরও পড়ুন: কীভাবে হেলিকপ্টারের সাথে ধাক্কা খেয়ে নদীতে ভেঙে পড়ল বিমান? ভাইরাল ATC অডিয়ো)
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, মৌনী অমাবস্যায় পূণ্যস্নান করতে গিয়ে প্রয়াগরাজে মৃত্যু হয়েছে কলকাতার বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দারের। তাঁর বয়স ছিল ৬৫ বছর। জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডে অশ্বিনী নগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাসন্তী পোদ্দার। ছেলে, মেয়ে ও নিজের বোনের সঙ্গে বাসন্তী পোদ্দার প্রয়াগরাজ গিয়েছিলেন পূণ্যস্নান করতে। জানা গিয়েছে, বিরল 'ত্রিবেণী যোগে' পূণ্যস্নানের জন্যে হুড়োহুড়ির মধ্যে বাসন্তী পোদ্দার টাল সামলাতে না পেড়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি পদপিষ্ট হন। এর জেরে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর ছেলে সুরজিৎ পোদ্দার গতরাতে জানিয়েছিলেন, মায়ের দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি। (আরও পড়ুন: BSF-এর মহিলা জওয়ানের ওপর হামলার চেষ্টা, গুলি চলতেই ছুট বাংলাদেশিদের)
আরও পড়ুন: ভারতে ঢুকে বড় বড় গর্ত খুঁড়ছে বাংলাদেশিরা, দেখেই তাড়া গ্রামবাসীদের
এদিকে আজ যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, এর জন্যে উচ্চপদস্থ কর্তাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের ডিজি প্রয়াগরাজে গিয়ে স্নানের ঘাট দেখে আসবেন আজকে। এর আগে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন যোগী। এর আগে পূণ্যার্থীদের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার জেরে বিভিন্ন মহল থেকে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে এই ঘটনা নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আগামী একমাসের মধ্যে এই নিয়ে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশও দিয়েছেন যোগী। এদিকে মৃতদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।