সেনাবাহিনীর জন্য তিনি আবিষ্কার করেছিলেন বিশেষ জুতোর। যা ভাবিয়ে তুলেছিল চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতকে। তাই এই বাংলার গবেষকের হাতে তিনি নিজে তুলে দিয়েছিলেন শংসাপত্র। আজ তিন বাহিনীর সমন্বয়ের প্রধান, বায়ুসেনার কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়েছেন। আজ সেই গবেষক ভাবতেই পারছেন না বিপিন রাওয়াত এই পৃথিবীতে নেই। হলদিয়ার এই গবেষকের নাম অনির্বাণ দাস। যিনি সিডিএস বিপিন রাওয়াতকে প্রদান করেছিলেন বিস্ময় জুতো। কয়েকমাস আগেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল। আর আজ তাঁকে এই খবর শুনতে হল।
যেদিন বিপিন রাওয়াত বন্দরশহরের এই গবেষককে শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন সেদিন উঠেছিল একের পর এক ছবি। এখনও সেই স্মৃতি বারবার তাঁর মনে পড়ছে। আর কষ্ট পাচ্ছেন। অনির্বাণের গবেষণার কাজে প্রচণ্ড খুশি হয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত। যদিও তাঁর গবেষণা এখনও সম্পূর্ণ স্বীকৃতি পায়নি। তার মধ্যেই এই খবর তাঁকে প্রচণ্ড শোকাহত করেছে। বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুর খবরে চোখের জল ফেললেন অনির্বাণবাবু। আর বলছেন, ‘কেন এমনটা ঘটল? খুব কষ্ট হচ্ছে।’
কী গবেষণা করেছেন অনির্বাণ? জানা গিয়েছে, তিনি কেয়ার ফ্রি সোল আবিষ্কার করেছেন। যাতে রোবটিক্সের সেন্সর টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে জুতোতে। এই জুতো সিয়াচেনের মাইনাস ৫৭ ডিগ্রিতেও সমান কার্যকরী। প্রবল ঠাণ্ডায় এই জুতো থেকে উৎপন্ন কম্পন এবং তাপশক্তি শরীরের রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করবে। এই গবেষণাকে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার্স সংস্থা। নয়াদিল্লির এই সংস্থা ‘বেস্ট ইনোভেটর’ পুরস্কারও দিয়েছে অনির্বাণবাবুকে। হলদিয়ার চৈতণ্যপুরের বাসিন্দা কলকাতার ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ও ইনোভেশন কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অনির্বাণবাবু।
উল্লেখ্য, বুধবার তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার এমআই–১৭ভি৫ হেলিকপ্টার। সস্ত্রীক মারা যান সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী। একইসঙ্গে মারা যান ১২জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। এমনকী মারা গিয়েছেন বাংলার বাসিন্দা সৎপাল রাইও। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।