ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ইজরায়েল– প্যালেস্টাইনের যুদ্ধ। দু দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। শনিবার হামাসের আচমকা হামলার পর সরাসরি যুদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে কার্যত আতঙ্কে রয়েছেন সেখানকার নাগরিকরা। আর সেই আতঙ্কের আঁচ এসে পড়ল বাংলাতেও। ইজরায়েলের বাণিজ্য নগরী তেল আভিভে আটকে পড়েছেন বাঙালি গবেষক সৌরভ কুমার। যার জেরে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: 'মরার মতো পড়েছিলাম...' মিউজিক ফেস্টিভালে গিয়ে হামাসের আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে বললেন ব্যক্তি
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইজরাইলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউরো সায়েন্স অ্যালজাইমার্স রোগ নিয়ে গবেষণা করছেন সৌরভ কুমার। গত দেড় বছর তিনি ইজরাইলের বাণিজ্যনগরী তেল আভিভেই রয়েছেন। তবে এতদিন ধরে সেখানে থাকলেও এরকম পরিস্থিতি আগে হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে তাঁর পরিবার। হুগলির ধনেখালির ভান্ডারহাটির বাসিন্দা সৌরভ। বর্তমানে তাঁর পরিবার রয়েছে উত্তরপাড়ায়। স্ত্রী অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরপাড়া প্যারী মোহন কলেজের ফিজিওলজির অধ্যাপক। তাঁদের ৭ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার নাম অর্ণা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোয় সৌরভের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ১৬ অক্টোবর বিমানের টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইজরাইলে এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার জেরে তিনি বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তবে সৌরভের সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে স্ত্রী অনিন্দিতার।
সৌরভ তাঁর পরিবারকে জানিয়েছেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতে পারছেন না। আর সাইরেন বাজলেই ঢুকে পড়তে হচ্ছে শেল্টার রুমে। যদিও এখনও পর্যন্ত জল বা খাবার পেতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সৌরভ। তবে মাঝেমধ্যে হামাস জঙ্গিরা সেখানে ঢুকে পড়ে হামলা চালাচ্ছে। কখনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে আবার কখনও বোমা ফেলা হচ্ছে। প্রায়ই বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। অনিন্দিতা জানান, তিনি নিজেও ইজরাইলে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কয়েক মাস ছিলেন। তাঁর স্বামী ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন বাঙালি এবং ভারতীয় সেখানে রয়েছেন। এখন তাঁরা কীভাবে দেশে ফিরবেন সেই কথাও ভাবাচ্ছে অনিন্দিতাকে।
দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন সৌরভের শ্বাশুড়ি শুভ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, পুজোর আগে তাঁর জামাইয়ের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। খুব চিন্তা হচ্ছে। আগামী কী হবে তা তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। এই অবস্থায় ভারত সরকার যাতে সৌরভ এবং বাকিদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে সেই আর্জিই তিনি জানিয়েছেন।