প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে গোটা উত্তরবঙ্গের জনজীবনকে এতটা বিপর্যস্ত করবে তা আগাম আশঙ্কাও করা যায়নি। তাই সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক। সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বজ্রপাত ও নদীতে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। ধসের কবলে পড়ে নিখোঁজ আরও এক। পাহাড় থেকে ডুয়ার্স হয়ে সমতল—বহু এলাকা প্লাবিত। এই পরিস্থিতিতে আবার এলো শোকের খবর। সিকিমে বেড়াতে এসে মৃত্যু হল এক বাঙালি পর্যটকের। মৃতের নাম দেবরাজ রায় (৪৯)। তিনি পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁর বাড়ি মালদহের ইংরেজবাজার থানার বিবেকানন্দ পল্লি এলাকায়। সুতরাং সেখানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তবে এই মৃত্যু কিন্তু দুর্যোগের জন্য ঘটেনি। দেবরাজের এক বন্ধু বিশ্বজিৎ ঝা জানান, প্রত্যেক বছরই তাঁরা পরিবার নিয়ে ঘুরতে যান। সেটা বিভিন্ন জায়গায়। এবার এসেছিলেন সিকিমে। গত ১৭ অক্টোবর তাঁরা এখানে ঘুরতে এসেছিলেন। তাও ২০ জনের দল নিয়ে। সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা ঘুরেছেন। কিন্তু দু’দিন আগে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় দেবরাজের। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে তাঁকে দেখানো হয়। তবে তাতে কোনও উন্নতি হয়নি। বরং শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাই তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেখানেই বুধবার মৃত্যু হয় তাঁর।
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর আগে থেকেই কালিম্পংয়ের লাভা, লোলেগাঁও–সহ সিকিমের বহু জায়গায় ছুটি কাটাচ্ছেন এই রাজ্যের অসংখ্য পর্যটক। তাঁদের অনেকেই আটকে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নানা খারাপ খবর আসতে শুরু করেছে। তার মধ্যে বাঙালি পর্যটকের এভাবে মৃত্যু তা ভাবা যায়নি। কেবল শ্বাসকষ্টের জেরে মৃত্যু পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে পারছেন না।
এই অবস্থায় এখন দেবরাজের দেহ মালদহে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু নাগাড়ে ভারী বৃষ্টির জেরে সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। ফলে দেহ নিয়ে আসা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের সভাপতি বিপ্লব গুপ্ত বলেন, ‘মিশুকে মানুষ ছিলেন দেবরাজ। ওঁর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’