চাকরি দেওয়ার নাম করে বেকারদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি হয়নি কারও। অবশেষে জমি-বাড়ি বিক্রি করে টাকা শোধ করছেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে খয়েরপুরে খোঁজ মিলল আরেক ‘সৎ রঞ্জন’এর। তবে এখনো তাঁর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নুরউদ্দিন বৈদ্য নামে ওই শিক্ষকের দাবি, প্রতারিত হয়েছেন তিনি নিজেও।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলাকার যুবকদের কাছ থেকে টাকা তুলতে শুরু করেন নুুরউদ্দিন। প্রাথমিক ও গ্রুপ ডিতে চাকরি দেওয়ার জন্য ৪ – ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তোলেন তিনি। কিন্তু চাকরি হয়নি কারও। এর পর টাকা ফেরতের জন্য নুরউদ্দিনের ওপর চাপ দিতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। পার্থবাবুর গ্রেফতারির পর চাপ চরমে পৌঁছয়। তখনই জমি - বাড়ি বিক্রি করে টাকা শোধ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
‘হাম রহে ইয়া না রহে কাম চলতা রহেগা’, কেন এমন মন্তব্য করলেন ফিরহাদ?
নুরউদ্দিনের দাবি, ২০১৬ সালে ‘দেবনাথবাবু’ নামে জনৈক তাঁকে ফোন করে টাকার বিনিময়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। সেই আশ্বাসে এলাকার বেকার যুবকদের থেকে টাকা তুলতে থাকেন তিনি। সব মিলিয়ে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। তার মধ্যে ৩৫ লক্ষ টাকা তিনি দেন দেবনাথবাবুকে। এর মধ্যে হঠাৎ ফোন বন্ধ হয়ে যায় দেবনাথবাবুর। তার পর থেকে আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি নুরউদ্দিন।
এর পর ফোনের মাধ্যমে অর্ণব নামে হাইকোর্টের এক আইনজীবীর সঙ্গে পরিচয় হয় নুরউদ্দিনের তিনি আরামবাগের চাঁদুর হাইস্কুলের শিক্ষক শিশির দলুইয়ের সঙ্গে নুরউদ্দিনের পরিচয় করিয়ে দেন। এই শিশির দলুই ২০ জনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নুরউদ্দিনের কাছ থেকে দফায় দফায় ৮৬ লক্ষ টাকা নেন শিশিরবাবু। তার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শিশিরবাবুও।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০১২ সাল থেকে এলাকায় চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলছেন নুরউদ্দিন। সম্প্রতি অল্প অল্প করে টাকা ফেরত দেওয়াও শুরু করেছেন তিনি। নুরউদ্দিন জানিয়েছেন, জমি বাড়ি বিক্রি করে ৩০ শতাংশ টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি টাকাও ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। টাকা ফেরত পেয়ে আর থানা পুলিশ করেননি চাকরিপ্রার্থীরা।
‘আমরা কাউকে আটকাইনি’, পশ্চিমবঙ্গ CID-র ‘অভিযোগের’ জবাব দিল দিল্লি পুলিশ
ওদিকে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, নুরউদ্দিন তৃণমূল নেতাদের ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, অভিযুক্তের সঙ্গে দলের যোগ নেই।