চা বাগানের শ্রমিকদের পরিবারের একাংশকে এবার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। এর জেরে চা বাগানের নন ওয়ার্কার শ্রমিকরাও অত্যন্ত উপকৃত হবেন। চা বাগানের নন ওয়ার্কার শ্রমিকদের এই নয়া স্কিমের আওতায় আনা হচ্ছে। অনেকের মতে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরাট পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। কার্যত চা বলয়ের মন মজাতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সূত্রের খবর, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসে পিএফের টাকা দেওয়া হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চা বাগানের শ্রমিকরা তাঁদের নানা সুযোগ সুবিধার জন্য চা বাগানের মালিক পক্ষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তবে ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তনের পরে একাধিক সরকারি স্কিমের আওতায় আসেন চা বাগানের শ্রমিকরা। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, বাংলা আবাস সহ একাধিক সরকারি স্কিমের সুবিধা পান চা বাগানের শ্রমিকরা। চা সুন্দরী প্রকল্পেও বিশেষ সুবিধা পান চা শ্রমিকদের পরিবারগুলি। চা শ্রমিকদের জন্য এই চা সুন্দরী প্রকল্প বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। উত্তরবঙ্গের চা বাগান সংলগ্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে চা সুন্দরী প্রকল্পের ঘর। এতে অন্তত মাথা গোঁজার একটা সুন্দর ঠাঁই পেয়েছেন চা শ্রমিকরা। এবার এসেছে সরকারের নতুন প্রকল্প। নন ওয়ার্কার শ্রমিকদের জন্য এবার সামাজিক সুরক্ষা যোজনা।
এই নয়া স্কিমের মাধ্যমে নন ওয়ার্কার শ্রমিকদের পিএফ অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ৫৫ টাকা করে জমা হবে। অর্থাৎ গোটা বছরে তাদের পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা হবে ৬৬০ টাকা। কর্মরত অবস্থায় বাগানের কোনও নন ওয়ার্কার শ্রমিক যদি দুর্ঘটনায় মারা যান তবে তাঁর পরিবার এককালীন ২ লাখ টাকা পাবেন। যদি স্বাভাবিকভাবে তাঁর মৃত্যু হয় তবে তিনি পাবেন ৫০ হাজার টাকা।
এই নয়া ব্যবস্থার মাধ্যমে চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্যরাও সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আসছে। আলিপুরদুয়ার জেলার ৬১টি বাগানেই শিবির করা হবে। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা শিবিরের আওতায় আনার জন্য বিভিন্ন বাগানে বাগানে শিবির করা হবে। রাজ্যের তরফেই তাদের জন্য পিএফ অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হবে।
তবে বিরোধীদের দাবি, সবটাই লোকদেখানো। রাজ্য়ের কোষাগারে এত টাকা কোথায় তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবার মাদারিহাট উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। তারপরই চা বলয়ের বাকি আসন দখল করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসকদল।