ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকায় আজও রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যতম ভরসা বাইক অ্যাম্বুল্যান্স। করিমুল হকের সেই দেখানো পথেই হাঁটা শুরু করেছে শিলিগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় রাতদিন সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য চালু হয়েছে এই বাইক অ্যাম্বুল্যান্স। তবে বর্তমানে যাবতীয় পরিষেবা বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে। বাসিন্দাদের মতে, করোনা অতিমারির সময় ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সুযোগ বুঝে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশও মোটা টাকা দর হাঁকছেন। সেই জায়গায় বিকল্প হিসাবে শিলিগুড়ির রাস্তায় এই বাইক অ্যাম্বুল্যান্স অন্যতম ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রাকেশ দত্তের দাবি, অল্প অসুস্থ যারা রয়েছেন তাঁদের শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল বা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই বাইক অ্যাম্বুল্যান্স অত্যন্ত কাজে লাগছে। চা বাগান এলাকা থেকে কারোর হাসপাতালে আসার প্রয়োজন হলে আমরা বাইক অ্য়াম্বুল্যান্স নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছি।
তবে সংস্থার দাবি, করিমুল হকের হাত ধরেই শিলিগুড়িতে চালু হয়েছিল বাইক অ্যাম্বুল্যান্স। তিনিই অনুপ্রেরণা। আসলে অ্যাম্বুল্যান্স দাদা বলেই পরিচিত ডুয়ার্সের করিমুল হক। পদ্মশ্রী করিমুল হক। জীবনের চড়াই উতরাই পেরিয়ে এখনও তিনি ভরসা অনেকের কাছে। তবে তাঁর এই জার্নির পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ ঘটনা। একটি সময় অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে সঠিক সময়ে নিজের মাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি, আর কাউকে যেন এভাবে চলে যেতে নয়। এরপর চা বাগানে পরিশ্রম করে টাকা জমিয়ে বাইক কেনা। সেই বাইকই রূপ নিয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সে। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়েই রোগী নিয়ে যেতেন করিমুল হক। আজও যান তিনি। তাঁর এই মহান কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পদ্মশ্রীও পেয়েছেন। সেই করিমুল হকই আজ অ্য়াম্বুল্যান্স দাদা। আর সেই অ্যাম্বুল্যান্স দাদার অনুপ্রেরণাতে শিলিগুড়ির রাস্তায় বাইক অ্যাম্বুল্য়ান্স।