এখন নিজের পুরনো ডেরা পাহাড়ে ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন তিনি। খুব শীঘ্রই শিলিগুড়িতে জনসভা করে পাহাড়ে পা রাখবেন তিনি। সমতলের সেই জনসভাই হবে তাঁর নতুন রাজনৈতিক এন্ট্রি। তাঁর ঘনিষ্ঠরা এই খবর জানিয়েছেন। হ্যাঁ, তিনি বিমল গুরুং। যিনি সাড়ে তিন বছর গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ২১ অক্টোবর কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করেন কলকাতায়। তারপরই গেরুয়া শিবির কথা রাখেনি এবং বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থণ করতে চান বলে জানান তিনি। এমনকী তৃতীয়বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি ক্ষমতায় দেখতে চান বলে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে ছিলেন।
সাংবাদিক বৈঠক করে বিশাল ছেত্রী বলেন, ‘খুব শীঘ্রই পাহাড়ে ফিরতে চলেছেন বিমল গুরুং। তৃণমূলের সমর্থনে পাহাড়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাবেন তাঁরা। তৃণমূলের সঙ্গে এখন আমাদের কোনও বিরোধ নেই। বিমল গুরুংয়ের নাম শুনেই বিনয় তামাং, অনিত থাপারা ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই অশান্তি ছড়াতে পারে বলে গুজব ছড়াচ্ছেন।’ তবে পাহাড়ে নিজের বাড়িতে ফেরা তখনই সম্ভব যখন রাজ্য সরকার আতঁর উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করবে। এটাও তাঁর অনুগামীদেরই কথা।
বিমল গুরুংয়ের নামে ইউএপিএ ধারায় মামলা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া বিমল গুরুং। এই বিষয়ে বিশাল ছেত্রী বলেন, ‘গুরুং শীঘ্রই কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি আসবেন এবং পদযাত্রা করবেন। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে হাজার হাজার পাহাড়ের মানুষ সেদিন উপস্থিত থাকবেন। তরাই এবং ডুয়ার্স তাঁকে স্বাগত জানাবে।’ জেলার কালচিনি, মাদারিহাট ও কুমারগ্রাম তিনটি বিধানসভায় প্রায় ৩০ শতাংশ গোর্খা ভোটার রয়েছেন, যারা ওই তিনটি আসনের জেতা–হারা নিয়ন্ত্রণ করেন।
কিন্তু পাহাড়ে গুরুং ফিরলে বিনয়–অনীতের সঙ্গে সংঘাত অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করা হচ্ছে। দার্জিলিঙে অস্ত্র হাতে আর কাউকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। এই ব্যাপারে পুলিশকে জিটিএ এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিঙের পাতলেবাসে বিমল গুরুংয়ের পার্টি অফিস খোলা নিয়ে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে বিনয় তামাংপন্থীদের গোলমাল ও সংঘর্ষ হয়।
মোর্চা নেতা বিনয় তামাং বলেন, ‘কেন বিমল গুরুংকে কলকাতায় ফিরতে দেওয়া হল তার উত্তর রাজ্য প্রশাসনের দেওয়া উচিত। তবে আমরা পাহাড়ে শান্তি বজার রাখার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’ হিন্দুস্তান টাইমসকে অনীত থাপা বলেন, ‘গুরুং আর একটা সুভাষ ঘিসিং হতে চলেছে। ওর কেরিয়ার এখন শেষের দিকে। যতদিন গোর্খাল্যান্ড ইস্যুর জন্য তিনি লড়াই করেছিলেন ততদিন তাঁর মূল্য ছিল। গোর্খাল্যান্ড ছাড়া তাঁর কোনও মূল্য নেই।’