শৈলশহরে এবার পাল্টে গেল রাজনৈতিক সমীকরণ। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিনয় তামাং। এমনকী, তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছেড়ে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। মোর্চা নেতা অনীত থাপাকে একটি চিঠি দিয়ে এই পদ ছাড়েন বিনয় তামাং। কিছুদিন ধরেই অনীতের সঙ্গে অম্ল–মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বিনয় তামাংয়ের। এবার নির্বাচনে দলের ব্যর্থতার দায় নিয়েই চিঠি লিখে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি। তবে এখনই রাজনীতি ছাড়ছেন না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিনয়। তাহলে কী বিমল গুরুংয়ের হাতেই দলের দায়িত্বভার তুলে দিতেই তাঁর এই পদক্ষেপ? উঠছে প্রশ্ন।
গত ৯ জুলাই দার্জিলিংয়ের একটি হোটেলে দলের বৈঠক বসে। সেখানে দলের সব নেতারা থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন বিনয় তামাং। তাঁকে ছাড়াই বৈঠক করেন অনীত থাপা। গত ১৩ জুলাই দলের সেন্ট্রাল কমিটির একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে বিনয় তামাংকে ডাকা হয়নি। তখন থেকেই শোনা যাচ্ছিল, হয়তো এবার কোনও কড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিনয়। এবার তাই হলো। কড়া সিদ্দান্ত নিয়ে মোর্চা ছাড়লেন তিনি।
অশান্ত পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে তিনিই নেতা হয়ে ওঠেন। আর পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল বিমল গুরুংকে। সুতরাং ক্ষমতাটা তিনি পেয়েছিলেন পিছনের রাস্তা ধরেই। কিন্তু সেটা ধরে রাখতে পারলেন না। একের পর এক নির্বাচনে পরাজয় বুঝিয়ে দিচ্ছিল পাহাড়ের অবিসংবাদী নেতা বিমল গুরুংই। এবার বিমল ফিরে এসেছেন। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মোর্চায়। এখান থেকে সরে যাওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না বিনয় তামাংয়ের বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কশীলবরা। কারণ অনীত থাপা আসলে বমন গুরুং ঘনিষ্ঠ।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিনয় তামাং বলেন, ‘সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে আমরা তিন আসনে প্রার্থী দিয়েছিলাম। কিন্তু তার মধ্যে দুটো আসনেই হেরে যাই। সেই হারের কথা মাথায় রেখে আজ আমি সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি এখনই রাজনীতি ছাড়ছি না। পরবর্তী রাজনৈতিক সফরটা কেমন হবে সেটা সময়ই বলবে।’ তবে বিনয় আজ জানান, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পতাকার আসল মালিক এসে গিয়েছেন। তাঁর হাতেই আমি পতাকা তুলে দেব। সূত্রের খবর, বিনয় তামাং তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনকেই তিনি শক্তিশালী করবেন।