বীরভূমের কাঁকড়তলায় তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে বোমাবাজি ঘটেছিল বলে অভিযোগ। আর সেই ঘটনার জেরে ক্লোজ করা হল কাঁকরতলা থানার ওসিকে। কাঁকরতলা থানার ওসি পূর্ণেন্দু বিকাশ দাসের পরিবর্তে এখন দায়িত্বে দুবরাজপুরের সিআই শুভাশিস হালদারকে দেওয়া হল। এখানে বোমাবাজির ঘটনায় বুধবার নতুন করে গ্রেফতার করা হয় স্বপন সেনকে। তিনি একজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। এমনকী এই স্বপন সেন নাকি কাজল শেখের ঘনিষ্ঠ বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনায় আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খয়রাশোল থেকে স্বপন সেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর আজ কাঁকরতলা থানার ওসি পূর্ণেন্দু বিকাশ দাসকে সরানো হল।
এদিকে এই এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার স্বার্থে কড়া বার্তা দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ। গত মঙ্গলবার দিন কাঁকড়তলায় জামালপুরে অজয় নদ থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার টাকার ভাগ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় শেখ সাকতার আলি মারাত্মক জখম হন। তার ডান–পা কেটে বাদ দিতে হয়। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রত্যেককেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালি তোলা হয় বলে অভিযোগ। সেই টাকারই ভাগ নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। আর তা থেকে বোমাবাজি পর্যন্ত হয়।
আরও পড়ুন: ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ দেখতে যাচ্ছেন সেচমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তড়িঘড়ি কাজ শুরু
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, অবৈধবাবে তোলা বালি বিক্রি করা হতো অন্যত্র। সেখান থেকে টাকার ভাগ আসত। আর সেই ভাগ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। তাতেই বোমাবাজি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ওই বোমাবাজির জেরে তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা স্বপন সেনের অনুগামীদের বিরুদ্ধে এই বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে। স্বপন সেন আবার কাজল শেখের খুব ঘনিষ্ঠ। উজ্জ্বল কাদেরি ও স্বপন সেনের মধ্যে বালি বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে গোলমাল হলে সেটা বোমাবাজির পর্যায়ে পৌঁছয়। পরস্পরের গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রাণ নিয়ে নিতে উদ্ধত হয়।
এছাড়া এই ঘটনার জেরে স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। জেলার একটা অংশ বলছে, সামনে উজ্জ্বল কাদেরি ও স্বপন সেন থাকলেও নেপথ্য নায়ক দু’জন। আর এই দু’জনের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব আসলে কাজল শেখ বনাম অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর মধ্যেই। তারই একদিকে উজ্জ্বল কাদেরি এবং অপরদিকে স্বপন সেন। অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বীরভূমের মাটিতে বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছেন কাজল শেখ। অনুব্রত আবার জেলমুক্তির পর ফিরে এসেছেন বীরভূমে। তাই বীরভূমের মাটিতে দুটি সমান্তরাল শক্তি জেগে উঠেছে। যার ফলশ্রুতি ক্ষমতা দখলের লড়াই।