গৃহস্থের ফোন গেল ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে। সেখানে অভিযোগ জানানো হল সরাসরি থানার ওসির বিরুদ্ধে। তাও আবার টাকা নেওয়ার মতো মারাত্মক অভিযোগ। ওই গৃহস্থ বাড়ি তৈরি করছিলেন। আর তা নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। আর এই ঝামেলার জেরেই প্রতিবেশী থানায় ফোন করে দেন। সেই ফোন পেয়ে পুলিশ এসে চমকে গৃহস্থের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন গৃহস্থ কীর্ণাহার থানার ওসির বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী গৃহস্থের দাবি, দিদিকে বলো হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানাতেই মিলেছে টাকা ফেরতের আশ্বাস। যদিও এই ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন কীর্ণাহার থানার ওসি। তবে নবান্ন থেকে ফোন পেয়ে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন বোলপুরের এসডিপিও।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাপে পড়ে গিয়েছেন কীর্ণাহার থানার ওসি। কারণ নবান্নের ফোন, এসডিপিও তদন্ত করছেন এবং বীরভূমে ফিরে এসেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর কানেও এই ঘটনা পৌঁছে গিয়েছে। পুলিশের এই অপকর্ম প্রমাণিত হলে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন। আর বাড়ির মালিক অভিযোগ করেন, দোতলা তৈরি করার সময় প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। প্রতিবেশী এই নির্মাণে বাগড়া দিতে চাইছিল। থানায় ফোন করে অভিযোগ জানালে কীর্ণাহার থানার ওসি ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তাঁকে ধরে মারধর করা হয় এবং থানায় আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ছাড়া পেতে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা বলেও অভিযোগ। তারপর ফোন করেন বাড়ির মালিক দিদিকে বলো হেল্পলাইন নম্বরে।
আরও পড়ুন: কল্যাণ হাতে আঘাত পেতেই প্রথম ফোন করেন কে? প্রকাশ্যে সাংসদ আনলেন গোপন কথা
‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে গোটা ঘটনা তুলে ধরেন বাড়ির মালিক। সব শুনে টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হয়। বীরভূমের কীর্ণাহার থানার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রাম থেকে এমনই অভিযোগের ফোন গিয়েছে নবান্নে। তারপরই হয় অ্যাকশন। যিনি এই অভিযোগ করেছেন তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি দোতলা বাড়ি করতে শুরু করি। আমার প্রতিবেশী তাতে বাধা দেয়। আদালতে যায়। সেখানে হেরে যায়। কিন্তু তারপর পুলিশ মিথ্যে অভিযোগ করে। কীর্ণাহার থানার ওসি এসে হুমকি দিয়ে বলে, এক লক্ষ টাকা দে। সেদিন ছেড়ে দেয়। তারপর আমাকে একদিন তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। আটকে রাখে। ছাড়া পেতে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা।’
এই ঘটনার পর খুব অপমানিত বোধ করেন বাড়ির মালিক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর স্ত্রীর দাবি, এরপর স্বামী বিষয়টির শেষ দেখে ছাড়তে ফোন করেন ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে। সেখানে সব অভিযোগ জানান। কীর্ণাহার থানার ওসি শেখ আসরাফুল এই টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। নবান্নের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করতে শুরু করেন এসডিপিও। তাতে চাপে পড়ে যান ওসি। কারণ ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ মেলার পর রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রীকে ডেকে পাঠান বোলপুরের এসডিপিও রকি আগরওয়াল। তিনি জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।