ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়িতে আগুন। আর মৃত্যু হল তিনজনের। মা, ছেলের পর মারা গেলেন গৃহকর্তাও। আজ, শনিবার সকালে বর্ধমানের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে গৃহকর্তার। তবে বাড়িতে এই আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। বোলপুরের রায়পুরের সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গীত গ্রামের ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কে বা কারা এই আগুন লাগাল সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এক হাতুড়ে ডাক্তারের খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে নিহত হয়েছেন শেখ তুতা ও তাঁর স্ত্রী রূপা বিবি। এদের দুই পুত্রসন্তান। তাদের নাম আয়ান শেখ এবং শেখ রাজ। রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ছোট ছেলেকে নিয়ে দম্পতি ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু ঘরের জানালা খোলা ছিল। তখন কেউ জানালা দিয়ে ঘরে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ দাউ দাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে আর্তনাদ করেন দম্পতি। তখন তা শুনতে পান শেখ রাজ। সে ছুটে পাশের ঘরে এসে দেখে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে আসে বড় ছেলে। কিন্তু তখন ভাইয়ের সঙ্গে বাবা–মাও অগ্নিদগ্ধ হয়ে গিয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে তাদের জেলে ঢোকাব’, সাংসদ পার্থ ভৌমিকের কড়া বার্তায় তোলপাড়
অন্যদিকে এই ঘটনা বগটুইয়ের ঘটনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। আয়ান তারপর তার মা রূপা এবং আজ প্রাণ হারালেন বাড়ির কর্তা শেখ তুতা। সেক্ষেত্রে এখনও বেঁচে আছে শেখ রাজ। তবে আশঙ্কাজনক অবস্থায়। একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর নেপথ্যে আসল কারণ কী সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনার নেপথ্যে পরকীয়া সম্পর্কের একটি সূত্র পেয়েছে পুলিশ। সেটাকেই তলিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন এমন হিংসার ঘটনা ঘটল? কারা আছে এটার পিছনে? কোন সমীকরণ তৈরি হয়েছিল সম্পর্কে? এগুলি মেলাবার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এছাড়া সূত্রের খবর, মৃত শেখ তুতার মেজো ভাইয়ের স্ত্রী স্মৃতি বিবির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই গ্রামেরই হাতুড়ে ডাক্তার চন্দন শেখ। তুতা এই অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান। তুতা যে জানতে পেরেছেন সেটা আবার জেনে যায় তাঁর মেজো ভাইয়ের স্ত্রী। সেটা ঢাকতেই এই আগুনে পুড়িয়ে মারা হল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ঘণীভূত হয়েছে। কারণ এটাই একমাত্র কারণ তাঁদের গোটা পরিবারকে হত্যা করার। তাই ছক করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ এখন স্মৃতিকে আটক করেছে। তবে ওই হাতুড়ে ডাক্তারের খোঁজ নেই। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।