শান্তিনিকেতনে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। শনিবার বেশি রাতে বাড়ি ফেরার সময় সমীর থান্ডারকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকজন তাঁর উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে আজ রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। মৃত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সমীর থান্ডারের (৪৬) বাড়ি কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পারুলডাঙা গ্রামে। ওই গ্রামেরই পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন সমীর। খুন করার পর নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয় সমীরকে। রবিবার তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে পঞ্চায়েত সদস্য সমীর থান্ডারকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকাল শনিবার তাঁকে পঞ্চায়েতে একটি বৈঠকের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেই বৈঠক শেষ করে বাড়ি ফেরার পথেই বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কে বা কারা তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী স্থানীয় উপপ্রধান তথা অঞ্চল সভাপতি মামুনের লোকজনরা সমীরকে মারধর করে এবং তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে একাংশের দাবি। বীরভূম জেলায় অনুব্রত মণ্ডল ফিরতেই এই খুনের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কি এবার দু’হাজার টাকা হতে চলেছে? বিস্ফোরক তথ্য দিলেন পঞ্চায়েত প্রধান
অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ তথ্য পুরোপুরি উড়িয়ে দেন। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, সমীর তৃণমূল কংগ্রেসের ভাল কর্মী ছিলেন। ওঁর সঙ্গে কারও অশান্তি ছিল না। শনিবার রাতে তাঁর উপরে কয়েকজন দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে জেরা করছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। খুব শীঘ্রই আসল বিষয় সামনে আসবে। মৃত পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে বলেন, ‘ওখানে একটা জায়গায় সাইকেল রাখা ছিল। সেটা আনতে বাবা গিয়েছিল। ফেরার পথে রাস্তার উপরেই বাবাকে মারধর করা হয়। আমি গিয়ে দেখি বাবা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।’
এছাড়া বীরভূম জেলার রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখের ঠাণ্ডা লড়াই সামনে এসেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে ওই তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য খুনের ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মৃতের স্ত্রী জানান, একটি জমির বিষয়ে সমীরের সঙ্গে কারও কারও গণ্ডগোল ছিল। মৃতের বোন জানান, তাঁর দাদাকে আগেও প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয়েছিল। উত্তরনারায়ণপুর এলাকায় তাঁর ওপরে হামলা করা হয়। সমীর যে পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন সেখানের উপপ্রধান তথা কঙ্কালীতলা অঞ্চলের সভাপতি মহম্মদ মামুন বলেন, ‘এটার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। আমরা যেটুকু খবর পেয়েছি, শনিবার রাতে তাঁর পাশের গ্রামের একটি পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা হয়। আর সেই থেকেই মারধরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ তদন্ত করছে।’