কম্বোডিয়ায় মৃত্যু হল বীরভূমের মাড়গ্রামের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হামিমের। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কম্বোডিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন আব্দুল হামিম (৩৫), যেখানে একটি বেসরকারি সংস্থায় ডাটা এন্ট্রি পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল ২০ মে, এরপর ২৫ মে মাড়গ্রাম থানার মাধ্যমে পরিবার জানতে পারে যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কম্বোডিয়ায় মারা গেছেন আব্দুল হামিম।
মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয় স্বজনরা। এই ঘটনার পর আব্দুল হামিমের পরিবার পড়ছে বিপাকে। সুদূর কম্বোডিয়া থেকে মৃতদেহ নিয়ে আসার খরচ প্রায় ছয় লক্ষ টাকা, যা জোগাড় করা হামিমের পরিবারের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন।
আরও পড়ুন। আরও কাছে রেমাল ঘূর্ণিঝড়! কন্ট্রোল রুমের নম্বর জানুন, রইল বিদ্যুৎ, পুরসভা, CESC হেল্পলাইন
আব্দুল হামিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাবা-মা, ভাই-বোন এবং অন্যান্য আত্মীয়রা গভীর শোকে মুষড়ে পড়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন আব্দুল। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার আর্থিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে চাই। কিন্তু এত টাকা কীভাবে জোগাড় করব, সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।’
খবর পেয়ে আব্দুল হামিমের বাড়ির সামনে গ্রামবাসীরা জড়ো হন। তাঁরা এই দুঃসময়ে হামিমের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আব্দুল খুব পরিশ্রমী ছেলে ছিল। পরিবারের ভালর জন্য বিদেশে গিয়েছিল। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি, যাতে তার দেহটা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি।’
আরও পড়ুন। বাংলাদেশের সাংসদ খুনে মুখ খুললেন সুন্দরী শিলাস্তি, মডেল হতে গিয়ে অন্ধকার গলিতে…
আব্দুল হামিমের স্ত্রী মাইনা পারভিন বলেন, ‘সাড়ে তিনমাস আগে কাজ করতে বিদেশে গিয়েছিল। ইচ্ছে ছিল কিছু বেশি আয় করে বাড়ি ফিরবেন। ২৫ মে মাড়গ্রাম থানা মৃত্যু সংবাদ দেয়। কিন্তু কিভাবে মৃত্যু হল, কোথাও ভর্তি ছিল কিনা কোন তথ্য দেয়নি। অথচ ২০ মে যখন আমার সঙ্গে কথা বলেন তখন অসুস্থতার কোন লক্ষণ ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমাদের দাবি, আমাদের সরকার তদন্ত করে দেখুক সে জীবিত না মৃত, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনা হোক। আমাদের পক্ষে ছয় লক্ষ টাকা খরচ করে স্বামীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
আব্দুল হামিমের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবার এবং গ্রামবাসীরা গভীর শোকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার দ্রুত সমাধান হবে এবং হামিমের পরিবার এই কঠিন সময়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে, এটাই চাইছেন গ্রামবাসীরা।