ভবানীপুর উপনির্বাচন এবং দুই কেন্দ্রে ভোটে বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। পুজোর পরেই আগামী ৩০ অক্টোবর খড়দহ, দিনহাটা, শান্তিপুর ও গোসাবায় উপনির্বাচন। রাজ্যের এই চার কেন্দ্রে প্রচারে ঝাঁপাতে দল বেঁধে দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেজন্য কাউকে দিলেন পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব, আবার কাউকে দিলেন ইনচার্জের দায়িত্ব।
রাজ্য বিজেপির তরফে কেন্দ্র ধরে ধরে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে বিজেপি নেতাদের। বিজেপির তরফে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, খড়দহ কেন্দ্রে অবজারভার বা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। এই অর্জুন সিং ভবানীপুর কেন্দ্রে বিজেপির তরফে নির্বাচন সংক্রান্ত ক্ষেত্রে দায়িত্বভার সামলেছেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। তবে ব্যারাকপুরের এই প্রভাবশালী সাংসদের উপরই ফের দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি এই খড়দহ কেন্দ্রে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী ও সব্যসাচী দত্তকে। এরসঙ্গে সহকারী ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধায়ক তথা অর্জুন পুত্র পবন সিং, বিজেপি নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, সুব্রত ঠাকুর ও অম্বিকা রায়কে। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচার কমিটির ইনচার্জ করা হয়েছে শীলভদ্র দত্তকে। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটে খড়দহ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়েছিলেন শীলভদ্র দত্ত। কিন্তু তিনি তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিনহার কাছে হেরে যান। এরপরই নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শীলভদ্র।
অন্যদিকে শান্তিপুর কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়া জগন্নাথ সরকার। এখানে আবার সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় অনুপম দত্তকে। পাশাপাশি এই কেন্দ্রে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিজিৎ দাসকে। সহকারী ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধায়ক গৌরীশংকর ঘোষ, পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, মুকুটমণি অধিকারী, অসীম বিশ্বাস ও অসীম সরকারকে। অন্যদিকে দিনহাটা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করা সাংসদ নিশীথ প্রমাণিককে। যিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাংসদ জয়ন্ত রায়কে। অন্যদিকে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয় দীপক প্রামাণিককে। পাশাপাশি সহ-ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আটজন বিধায়ক-সহ ১০ জনকে। গোসাবা কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে। ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংকে। সহকারি ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চার বিধায়ক সহ পাঁচজনকে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির ঘর ভাঙতে শুরু করেছে। তারপর আবার সম্প্রতি ভবানীপুর সহ তিন কেন্দ্রে হেরে আরও একটা বড় ধাক্কা খেল গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, ফের ঘর ভাঙবে নাতো। তাই সময় হাতে থাকতে সাংসদ, বিধায়কদের কাজে লাগিয়ে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তবে তৃণমূলের তরফে এই চার কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও বিজেপির তরফে প্রার্থীর নাম এখনও ঘোষিত হয়নি।