বিজেপি–র উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতির। জল গড়িয়েছে আদালতেও। এবার উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে বিজেপি–র যুব নেতাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার ঘটনাটি ঘটে হালিশহরের রবীন্দ্রপল্লীতে।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সৈকত ভাওয়াল (৪০)। শনিবার বিকেলে তিনি বিজেপি–র গৃহসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে যান। এই প্রচার কর্মসূচিতে তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মীও ছিলেন। অভিযোগ, ঠিক সেই সময়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের ঘিরে ধরে। বিজেপি কর্মীদের বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও সেখানে আটকে পড়েন সৈকত। তখনই বাঁশ, লাঠি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় সৈকতকে।
রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তাতেই পড়েছিলেন সৈকত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে এলাকাবাসীরা উদ্ধার করে নিয়ে যান কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা বিজেপি নেতা সৈকতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। জানা হিয়েছে, হালিশহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈকত আদতে আরএসএসের কর্মকর্তা। তিনি ওই এলাকার বুথ সভাপতি।
বিজেপি–র অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এ ঘটনার পিছনে রয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীরা সব এলাকারই ছেলে। খবর পেয়ে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে পৌঁছন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি এ ঘটনার ব্যাপারে বলেছেন, ‘সৈকত–সহ আরও কয়েকজন মিলে এদিন হালিশহরে গৃহসম্পর্কে অভিযান করছিলেন। সে সময়ই তৃণমূলের গুন্ডা সুবোধ অধিকারী ও তার ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ জন দুষ্কৃতী ওদের ওপর হামলা চালায়। সৈকতকে ওরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।’
দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, ‘অর্জুন সিংয়ের থেকে বড় ক্রিমিনাল আর কেউ নেই। এতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। আমার কাছে খবর আছে, এটা আসলে পারিবারিক গণ্ডগোল। সেই থেকেই মারধর, মৃত্যু। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।’
কয়েকটি ছবি টুইট করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘আমি শুধুমাত্র এই ছবিগুলির মাধ্যমে এটা বোঝাতে চাইছি যে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে কী ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ রাজ্যে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।’ এদিন হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসেছেন মুকুল রায়ের ছেলে বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায়ও।