হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলল বিজেপি। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, সম্ভবত রাজনৈতিক কারণেই বিধায়ককে খুন করা হয়েছে।
সোমবার ভোরের দিকে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে হেমতাবাদের বিধায়কের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর হাত বাঁধা ছিল। মৃত্যুর কারণ নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস। হেমতাবাদের স্থানীয় বিজেপি নেতাকর্মীদের দাবি, বিধায়ককে খুন করা হয়েছে। তারপর আত্মহত্যা প্রমাণ করার জন্য দেহ দোকানের বারান্দায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি।
একই বক্তব্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি বলেন, ‘রাত দেড়টার সময় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন পরিবারের সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। পরিচিত লোক হবেন নিশ্চয়ই। মনে হচ্ছে মেরে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত রাজনৈতিক খুন। উনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এলাকার কারোর নিশ্চয়ই অসুবিধা হচ্ছিল। পুলিশের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা উচিত।’ প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। রহস্য মৃত্যুকে ‘সম্ভবত রাজনৈতিক খুন’ হিসেবে উল্লেখ করলেও ঘটনায় কোনও দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেননি দিলীপ।
যদিও আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। একটি টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লেখার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বেশি কিছু লিখতেও চাই না। এর উত্তর আমরা মানুষেকে সঙ্গে নিয়ে দেব। শুধু সময়ের অপেক্ষা #বাংলার লজ্জা মমতা #টিএমছি।'
দলের বিধায়কের রহস্য মৃত্যুর ঘটনার মাধ্যমে বাংলায় যে ‘গুন্ডারাজ’ চলছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। একটি টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের সন্দেহজনক বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত মর্মান্তিক ও শোচনীয়। এটি মমতা সরকারের গুন্ডারাজ এবং আইন শৃঙ্খলা ব্যর্থতাকে তুলে ধরেছে। ভবিষ্যতে মানুষ এরকমেপ সরকারকে ক্ষমা করবেন না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
খুনের অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। ঝুলন্ত দেহের একটি ভিডিয়ো টুইট করে তিনি বলেন, ‘নিন্দনীয় এবং কাপুরুষোচিত কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বিজেপি নেতাদের হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। সিপিএম (সিপিআইএম) ছেড়ে বিজেপিতে আসা হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের হত্যা করা হল। ওঁনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওঁনার কি শুধু দোষ ছিল বিজেপিতে যোগ দেওয়া?’
যদিও খুনের অভিযোগ মানতে নারাজ উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তিনি বলেন, ‘উনি তো আগে সিপিআইএম করতেন। তারপর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আত্মহত্যা করেছেন বলে আজ সকাল খবর পেয়েছি। সত্যিটা সামনে আসুক। পুলিশ পুরো তদন্ত করে দেখুক। তাঁকে যদি খুন করা হয়, তাহলে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক।’