রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হতেই ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইতিহাস’ ঘাঁটতে শুরু করল বিজেপি। অতীতে তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের যে অভিযোগ উঠেছিল, তা নিয়ে একদিকে ঋতব্রতকে আক্রমণ শানাল পদ্মশিবির। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলল। বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেছেন, ঋতব্রতের মতো ব্যক্তিকে যে রাজ্যসভার প্রার্থী করেছে তৃৃণমূল, তাতে পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের সুরক্ষা এবং সম্মান নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। এমনকী কয়েকধাপ এগিয়ে বঙ্গ বিজেপির মিডিয়ার কো-ইনচার্জ কেয়া ঘোষ তো আবার ঋতব্রতকে ‘বালিশ নেতা’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
তাঁরা যে ঋতব্রতকে আক্রমণ শানিয়েছেন, সেই তরুণ নেতাকে দলবিরোধী কার্যকলাপ এবং 'মহিলাদের সম্পর্কে নৈতিক অবক্ষয়'-র মতো একাধিক অভিযোগ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বহিষ্কার করেছিল সিপিআইএম। সেইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে অসঙ্গতি, দলের নির্ধারিত পথের বিরুদ্ধে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপনের অভিযোগ উঠেছিল।
আগে ঋতব্রতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল, তৃণমূলকে কটাক্ষ মালব্যের
সেই বিষয়টি তুলে ধরে শনিবার মালব্য বলেন, ‘রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেছে নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাদের শোষণের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল সিপিআইএম। যে কাজকে প্রায়শই ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে একটা সময় রাজ্যসভা থেকে তাঁর ইস্তফা এবং তাঁকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।’
আরও পড়ুন: ‘পরিশ্রমের দাম সবসময়েই শেষে পাওয়া যায়’, ঋতব্রতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা অভিষেকের
মালব্যের সেই আক্রমণের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা আক্রমণ শানিয়েছেন মালব্যকে। বিজেপির কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে মহিলাদের নির্যাতন এবং ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, সেইসব তালিকাও পেশ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের পতাকা ধরবেন তন্ময় ভট্টাচার্য’, কটাক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর
মমতাই প্রকৃত বামপন্থার পথ অনুসরণ করেন, দাবি ঋতব্রতের
যদিও রাজ্যসভায় জহর সরকারের ছেড়ে যাওয়া আসনে তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণার পরে সেইসব বিতর্কে যাননি ঋতব্রত। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ালের সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, মমতাই প্রকৃত বামপন্থার পথ অনুসরণ করেন। তিনি গরিব মানুষের জন্য কাজ করেন। নিজেকে উজাড় করে দেন সমাজের প্রান্তিক মানুষের জন্য।
ওই সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত দাবি করেন, আগে যখন সিপিআইএমে ছিলেন, তখন দলের আদেশ মেনে মমতার সমালোচনা করতে হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে উপলব্ধি করতে পারেন যে কতটা অযৌক্তিক কাজ করেছিলেন। যাচাই না করেই সিপিআইএমের কথা যে বলেছিলেন, তা অত্যন্ত অযৌক্তিক ছিল বলে দাবি করেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি।