ভয়াবহ নদী ভাঙনের মুখে মালদহ। এই ভাঙনের জেরে এখানকার বহু মানুষের মাথার সামান্য ছাদ তলিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি দেখে প্রাক্তন বিধায়কও আশঙ্কা করছেন তলিয়ে যেতে পারে তাঁর বাড়িও। তাই নতুন বাড়ি খুঁজছেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। সব হারিয়ে এখন মানুষ কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে বাড়ি ভেঙেছিল তৎকালীন বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বিধায়কের। এখন তিনি প্রাক্তন বিধায়ক। আবার তাঁর বসতবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে নতুন করে বাড়ির খোঁজ করছেন বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক স্বাধীনকুমার সরকার। এখন স্বাধীনবাবুর বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে অবস্থান করছে গঙ্গা। তাই বসতভিটে থেকে জিনিসপত্র সরাতে শুরু করেছেন তিনি। স্বাধীনবাবু নিজেই জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগেও বাড়ি তলিয়ে গিয়েছিল। তার পর সাত লক্ষ টাকা খরচ করে নতুন বাড়ি তৈরি করেছেন। সেটাও এখন নদীগর্ভে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
এখানে মানুষের জীবন–জীবিকা এখন বিপদের সম্মুখীন। সব হারিয়ে বিভিন্ন সরকারি আশ্রয় শিবিরে স্থান পেয়েছেন নদী সংলগ্ন এলাকার মানুষজন। আশ্রয়হীন মানুষের হাহাকার এখানে পা রাখলেই চোখে পড়ছে। স্কুল বাড়িও তলিয়ে গিয়েছে। কোথায় যাবেন তাঁরা বুঝতে পারছেন না গ্রামের গরীব মানুষজন। কোলে সন্তান নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন মায়েরা। কারণ আজ যে সব হারিয়ে গিয়েছে। যেটুকু সঙ্গে রাখতে পেরেছেন তা মাথায় বয়ে নিয়ে চলেছেন পুরুষেরা।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। তারপর মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বীরনগর স্কুলের বদলে অন্যত্র ত্রাণ শিবির খোলার জন্য জেলাশাসককে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’ আর জেলাশাসক বলেন, ‘কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের এই এলাকাটিতে ভাঙন প্রতিরোধের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারেজের। রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের এই এলাকায় কাজ করার অনুমতি নেই। ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’