গতকাল দিঘায় জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইসকনের রাধারমণ দাস। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বেশ সরব হয়েছিলেন রাধারমণ দাস। এমনকী কলকাতায় ইসকন মন্দিরে প্রতিবাদের আয়োজনও করেছিলেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি করা হয়েছিল সেখানে। বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবির প্রতিবাদ হয়েছিল সেখানে। এহেন রাধারমণ দাসকে মমতার পাশে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। রাধারমণ দাসকে নিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'মাননীয় রাধারমণ দাসকে দেখে আমার লজ্জা লেগেছে। শ্রীলা প্রভুপাদ ইসকন তৈরি করেছিলেন চৈতন্য দেবের ভাবধারায়। চৈতন্য দেব তিনবারের বেশি পুরীতে গিয়েছেন। পুরীধাম নিয়ে চৈতন্য দেবের যে কথা আছে, তা তিনি পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন রথযাত্রার মাধ্যমে। আপনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) পাশে দাঁড়িয়ে আপত্তি করলেন না? আপনার আপত্তি জানানো উচিত। চৈতন্য দেব, শ্রীলা প্রভুপাদ-র ভাবধারাকে অপমান করলেন মমতা। আপনি তার সাক্ষী থাকলেন।' (আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টাই 'র এজেন্ট'? মুখ খুললেন ইউনুসের সরকারে থাকা ছাত্র নেতা)
আরও পড়ুন: অপহরণের হুমকি বাংলাদেশে, হিন্দু নাবালিকা পালিয়ে এলেন ভারতে, ধরল BSF
উল্লেখ্য, দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ লগ্নে। ইতিমধ্যেই ওই মন্দির উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, 'সাংবিধানিকভাবে কোনও সরকার এক্সচেকারের টাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও দাঁড়িয়ে যা যা বলেছেন সেটা ভণ্ডামি ও মিথ্যাচার। আমি একজন জগন্নাথ দেবের ভক্ত হিসেবে বলতে চাই, চারধামের একধাম পুরী ধাম। একে নকল করবেন না। এই অধিকার কোনও হিন্দু আপনাকে দেয়নি। কেদার–বদ্রীর বিকল্প হয় না। গীতাকে পালটানো যায় না। অভিনন্দনকে শুভনন্দন করতে পারেন। কিন্তু পুরী ধামের নকল মন্দির করতে পারেন না। সাহস কোথা থেকে হয় এসবের?' (আরও পড়ুন: হেনস্থার শিকার হয়েও দমছেন না চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী, এদিকে করলেন পুলিশের প্রশংসা)
আরও পড়ুন: আরজি কর মামলায় আইনজীবী বদল, এবার কাকে দায়িত্ব দিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা?
আর এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, 'ঈর্ষা থেকেই এসব করছেন বিরোধী দলনেতা। দিঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মুখ্যমন্ত্রী তা দেখতে গিয়েছেন। তার মধ্যেই বিরোধী দলনেতা কটাক্ষে নেমেছেন। জগন্নাথ দেবের মন্দির তৈরি হচ্ছে তা নিয়েও কটাক্ষ। এত ঈর্ষা কীসের?' কুণালের কথায়, 'বাংলার যা আকর্ষণ তাতে এই তীর্থক্ষেত্র গোটা পৃথিবীর কাছে রাজ্যের মাথায় নতুন পালক যোগ করবে। এত ঈর্ষা কীসের? এই রাজ্যে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সব ধর্মের জন্য উপাসনার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ দেবের সুন্দর মন্দির করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আপনাদের গায়ে কি ফোসকা পড়ছে? এসব বিরোধী দলনেতার ছেলেমানুষী। পুরোটাই মেকি। বাংলার এই গর্ব ওরা সহ্য করতে পারছে না।'