২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিকদের সাহায্য নিয়ে এনডিএ সরকার গড়েছে। ফলপ্রকাশের পর এই বিষয়ে নাম না করে মোদী–শাহ জুটিকে বিধেঁছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এই নিয়ে এবার বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বঙ্গ–বিজেপির নেতৃত্বের উপর খাপ্পা। তা নিয়ে আগেও নানা মন্তব্য করেছিলেন। এবার সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় বঙ্গ–বিজেপির আকচাআকচি নিয়ে আক্রমণ শানালেন অনুপম।
এদিকে জাতীয় রাজনীতিতে এবং বাংলাতেও বিজেপির শোচনীয় খারাপ ফল হয়েছে। ৩০টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হলেও মিলেছে মাত্র ১২টি। অর্থাৎ ২০১৯ সালের থেকে ৬টি আসন কমে গিয়েছে বাংলায়। সেখানে গত লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে সাতটি বেশি আসনে জিতে ২৯টি আসনে পৌঁছেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার অনুপমের নিশানায় দলেরই বিক্ষুব্ধ নেতৃত্বের একাংশ। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে বিজেপির ভরাডুবির পর বিজেপির অন্দরে যে পরিস্থিতি চলছে সেটাকে সার্কাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন অনুপম হাজরা। তিনি বারবার দলের কাজের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বাংলায় বিজেপির ফল খারাপের জন্য আরএসএসের পত্রিকা ‘স্বস্তিকায়’ একাধিক কারণ তুলে ধরা হল। ‘স্বস্তিকা’য় লেখা প্রতিবেদনে বাংলায় ভরাডুবির জন্য প্রধান যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেটা যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও গ্রহণযোগ্য, জোরদার মুখ ছিল না বিজেপির। এবার তার সঙ্গে যোগ হল অনুপমের খোঁচা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অনুপম লেখেন, ‘সাত–আট মাস আগে যে বিজ্ঞ ব্যক্তিরা আমার উদ্দেশে মিডিয়ার সামনে জ্ঞান দিতেন। বলতেন, দলের কথা প্রকাশ্যে না বলে দলের মধ্যে বলা ভাল। টেনে হিঁচড়ে ১২টা আসন পাওয়ার পর তারাই এখন পার্টির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সবথেকে বেশি মুখ খুলছেন।’
আরও পড়ুন: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও জোরদার মুখ নেই’, সমালোচনা করল আরএসএস
এছাড়া বিজেপির যে উচ্চাশার ফানুস তৈরি হয়েছিল সেটা ফুটো হয়ে গিয়েছে ফল প্রকাশের পরই। সাংগঠনিক দুর্বলতায় বিজেপি ৬টি আসন, আনুমানিক ১.৫ শতাংশ ভোট হারিয়েছে। সঙ্গে জুড়েছে নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর অনুপম হাজরা গোটা বিষয়টি নিয়ে লেখেন, ‘যে সার্কাস চলছে সেটা উপভোগ করছি।’ লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের পর অনেক বিজেপি নেতা নানা ধরনের দলবিরোধী মন্তব্য করেছেন। এমনকী বিজেপির চারজন জয়ী সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি থেকে একবার এমন অভিযোগ করেছিলেন। সেখানে অনুপমের পোস্ট অস্বস্তি তৈরি করল বঙ্গ–বিজেপির অন্দরে বলে মনে করা হচ্ছে।