স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। লক্ষ লক্ষ টাকা তাঁদের থেকে নিয়ে গা–ঢাকা দিয়েছেন বিজেপির শিক্ষক নেতা বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে প্রতারিত ওই মহিলারা টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন সন্দেশখালিতে। যে সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি ধোঁয়া তুলেছিল লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সেখানেই উঠল মারাত্মক অভিযোগ। আজ, বুধবার সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের খুলনা গ্রামে তুমুল হট্টগোল পড়ে যায়। অভিযুক্ত বিজেপি নেতার নাম ভবতোষ দাস। তিনি দুলদুলি হাইস্কুলের শিক্ষক। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে তিনি বসিরহাট কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। প্রচার থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজকর্ম দেখভাল করতেন।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, ভবতোষ দাসের বাড়ি সন্দেশখালি দু’নম্বর ব্লকের খুলনা গ্রামে। স্থানীয় দুলদুলি হাইস্কুলের শিক্ষক। কিন্তু সন্দেশখালি আন্দোলনেও তাঁকে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায়। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন এই নেতা। আর সেই বিশ্বাস অর্জন করার পর মোটা টাকা সুদের প্রলোভন দিয়ে নানা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাছ থেকে ভবতোষ দাস লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। বছর ঘুরলে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার গ্রামের মহিলারা তাঁর কাছে টাকা চাইতে গেলে নানা অছিলায় তাঁদের ফিরিয়ে দেন ওই বিজেপি নেতা। তাই গ্রামের প্রতারিত মহিলারা ভবতোষের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হতেই ভবতোষ তখন পুলিশের ভয় দেখান বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: হঠাৎ করে একধাক্কায় কমল মুরগির মাংস–ডিমের দাম, বাংলা বাজারে কেন এমন পতন?
এই পরিস্থিতির আঁচ করেই গত সপ্তাহ থেকে ভবতোষ ও তাঁর স্ত্রী গা–ঢাকা দেন। ওই বাড়িতে এখন ঝুলছে তালা। টাকা ফেরতের দাবি তুলে আজ, বুধবার গ্রামের মহিলারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। আর ভবতোষ দাসের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিষ্ণুপদ প্রামাণিক বলেন, ‘সন্দেশখালি আন্দোলনে ভবতোষ অন্যতম মুখ ছিলেন। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। এখন আমরা জানতে পারলাম, প্রলোভন দিয়ে তিনি গ্রামের মহিলাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’
এই বিষয়ে বিজেপি নেতারা আর মুখ খুলছেন না। তাছাড়া সন্দেশখালিতে এখন রেখা পাত্রকে খুব একটা দেখা যায় না। অভিযুক্ত ভবতোষ দাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ভবতোষের ভাই বলরাম দাসের বক্তব্য, ‘ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে সেটা আমি জানি না। তাই আমি বিশেষ কিছু বলতে পারব না।’ বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা রতিকান্ত ঢালির কথায়, ‘ভবতোষ স্কুলে শিক্ষকতা করেন। উনি আমাদের দলের কেউ নন। রেখা পাত্রের ছায়াসঙ্গী ছিলেন কিনা আমি বলতে পারব না। তৃণমূল কংগ্রেস আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতেই এসব অভিযোগ তুলছে।’