উপনির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে দলবদলের গুঞ্জন তৈরি করলেন জন বারলা। সম্প্রতি বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বানারহাটে নিজের বাড়িতে বৈঠকও করেছিলেন তিনি। আর এবার বুধবার বিন্নাগুড়িতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী জন বারলাকে দেখা গেল মাদারিহাট উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পোর সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাসিমুখে হাত মেলাতে। এমনকী খোশমেজাজে গল্প করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর প্রশংসা করেন জন বারলা। এই ঘটনায় ডুয়ার্স জুড়ে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনার একটি ভিডিযো ভাইরাল পর্যন্ত হয়ে যায়। যার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। ওই ভিডিয়োয় দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে দিব্যি গল্প জুড়েছেন বারলা। বহুক্ষণ ধরেই দু’জনকে কথা বলতে দেখা যায়। যার পর থেকেই বিজেপির প্রাক্তন সাংসদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন শুরু হয়। এই জেলার প্রবীণ তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি সীমা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দলের প্রার্থীকে নিয়ে বিন্নাগুড়িতে প্রচার করছিলাম। সেখানে একটি দোকানে জন বারলার সঙ্গে দেখা হয়। তিনি আমাদের প্রার্থী সঙ্গে হাত মেলান। আমাদের প্রার্থীর প্রশংসাও করেন। আমরা বারলার কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।’
আরও পড়ুন: লোকাল থানাগুলি কেমন কাজ করছে? লালবাজারের চর এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে ছদ্মবেশে
আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। সেখানে এখন উত্তরবঙ্গের দুটি কেন্দ্র—মাদারিহাট এবং সিতাই নিয়ে চাপে আছে বিজেপি। কারণ গোর্খারা ওখানে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করেছেন। আর জন বারলা বেঁকে বসেছেন। এই বিষয়ে বিজেপির আলিপুরদুয়ারের সভাপতি তথা সাংসদ মনোজ টিগ্গার বক্তব্য, ‘বিজেপির ভোট হয় দলের সংগঠনের জোরে। মাদারিহাটে আমাদের সংগঠন যথেষ্ট মজবুত। সেই জোরেই আমরা জিতব। কে কি করছে তাতে কিছু যায় আসে না।’ আর মাদারিহাট উপনির্বাচনের আগে নিজের শক্তিপরীক্ষায় ঘুঁটি সাজাচ্ছেন জন বারলা। সূত্রের খবর, রবিবার বানারহাটে নিজের বাড়িতে আদিবাসী এবং চা–বাগানের শ্রমিক নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি।
ওই বৈঠকে এই নির্বাচনের নীল–নকশা তৈরি হতে পারে। তবে সবটাই গোপন রাখা হয়েছে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের একটা অংশ এবং চা–বাগানের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে বৈঠক করবেন জন বারলা। এখন বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে তোপ দেগেছেন তিনি। নাম না করে তুলোধনা করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার বিরুদ্ধে। জন বারলা এই উপনির্বাচনে অন্তর্ঘাত করতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন বিজেপি নেতারা। জন বারলা বেঁকে বসেছেন বলেই ডুয়ার্সে বিজেপির চা–শ্রমিক সংগঠনও আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে। সুতরাং মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বারলার অনুগামীদের ভূমিকা কেমন হবে তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই।