চারদিক থেকে চাপ তৈরি হওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী অবশেষে হাজিরা দিতে এলেন কাঁথি থানায়। একসময় যে থানায় তিনি চোখরাঙানি দেখাতেন সেখানেই আজ হাজিরা দিলেন। আজ, শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ কাঁথি থানায় এসে হাজির হন অধুনা বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী। এখন অবশ্য তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। তবে সৌমেন্দু অধিকারীর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রক্ষাকবচ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করতে পারলেও এখন গ্রেফতার করতে পারবে না। এটা বুঝতে পেরেই তিনি হাজিরা দিতে এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন কাঁথি থানায় এলেন সৌমেন্দু? কাঁথি পুরসভার দু’বারের পুরপ্রধান ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। পুরপ্রধান থাকাকালীন সেখানে একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। এমনকী তদন্ত শুরু করেছেন অফিসাররা। কাঁথি পুরসভার শ্মশানে স্টল দুর্নীতি, সারদা কোম্পানি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে দুর্নীতি, ত্রিপল চুরি মামলা, টেন্ডার দুর্নীতি–সহ নানা মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছে এবং রক্ষাকবচও দিয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজের প্রেসিডেন্ট ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। তখন তিনি কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। অভিযোগ, তখন ওই কলেজের মেয়েদের এবং ছেলেদের হস্টেল বিল্ডিং, লাইব্রেরি এবং অধ্যাপকদের জন্য বিল্ডিং–সহ মোট ৬টি বিল্ডিংয়ের বেআইনিভাবে অনুমোদন দিয়েছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। মামলার হলফনামায় অভিযোগ করা হয়েছে, কোনওরকম টেন্ডার ও ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই ওই বিল্ডিংগুলির অনুমোদন দেন তিনি। যাতে ২ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
কী কারণে আজ হাজিরা দিলেন সৌমেন্দু? কাঁথি শ্মশানের জন্য জোর করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা চলছে। সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর পর্যন্ত দায়ের হয়েছিল। গত ১১ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের অন্তবর্তীকালীন নির্দেশে রক্ষাকবচ পান সৌমেন্দু অধিকারী। তাঁকে কাঁথি থানার পুলিশ ডেকে পাঠান। তখনই ২৯ সেপ্টেম্বর সেই সমনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সৌমেন্দু। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁকে ফের রক্ষাকবচ দেন। দশমীর পর তাঁকে তদন্তকারীরা ডাকতে পারবেন বলে আদালত জানিয়ে দেয়। দ্বাদশীতেই কাঁথি থানায় হাজিরা দিলেন সৌমেন্দু অধিকারী।