মালদার গাজোল থানা এলাকার আদিনা মসজিদটি নাকি হিন্দু মন্দির ছিল। বিগত কয়েক বছর ধরে এমনটাই দাবি করে আসছে বাংলার বিজেপি নেতারা। ফের এই দাবিতে সরব হলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। পাশাপাশি তাঁর দাবি, এই কাঠামোর 'আসল ঐতিহ্যকে' ফিরিয়ে আনতে আইনি পথে হাঁটা উচিত। এই নিয়ে দীর্ঘ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেন তরুণজ্যোতি। সঙ্গে আদিনা মসজিদের বিভিন্ন জায়গার দৃশ্য তুলে ধরে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন তরুণজ্যোতি। উল্লেখ্য, অনেকেরই দাবি, এই আদিনা মসজিদ আদতে 'আদিনাথ মন্দির'। আরও দাবি করা হয়, এই মসজিদ থেকে মন্দির পুনরুদ্ধারের জন্যে নাকি জিতু সর্দার প্রাণ দিয়েছিলেন। (আরও পড়ুন: এবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে সরব ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন, ইউনুসকে লেখা হল চিঠি)
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে হিন্দু মহিলা খুনে সামনে এল ‘চিন্ময়-যোগ’, সরব এপার বাংলার নেতারা
নিজের পোস্টে তরুণজ্যোতি লেখেন, 'ভারতের বৃহত্তম মসজিদগুলির একটি হল আদিনা মসজিদ। বাংলার সুলতান সিকন্দর শাহ ১৩৬৯ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মাণ করেছিলেন। এই মসজিদটি স্থাপত্যশৈলীর কারণে বিখ্যাত। তবে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ থেকে জানা যায় যে এটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত হয়েছিল। বিষ্ণু, সরস্বতী এবং গণেশের মতো হিন্দু মূর্তি, স্বস্তিকা এবং ব্রহ্মা কমলের মতো প্রতীকগুলি এখনও এই মসজিদের কাঠামোতে দৃশ্যমান। যক্ষ ও যক্ষিণী ভাস্কর্য, দ্বারপাল ও অনন্তনাগের খোদাই, এবং ব্রহ্ম-পীঠ ও বিষ্ণু-পীঠের অবশিষ্টাংশ সহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলিও এখনও দেখা যায় সেখানে। এই আবহে এটি যে হিন্দু মন্দির ছিল, সেদিকেই নির্দেশ করে এই সব নিদর্শন। এই স্থাপত্যের ভিতে ধূসর পাথর, মন্দিরের স্থাপত্যের শৈলী দৃশ্যমান। পরবর্তীতে এই স্থাপত্যে যে লাল ইটের কাঠামো যোগ করা হয়েছে, সেই বৈপরীত্যও সবাই দেখতে পান।' (আরও পড়ুন: ফ্যাশন শো-তে 'ব়্যাম্প ওয়াক' সুকান্ত মজুমদারের! চমকে দিলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি)
আরও পড়ুন: 'পায়খানা পরিষ্কার করায় কৃতিত্ব…', ৪ দিনে কলকাতা দখলের 'হুংকারের' জবাব তথাগতর
বিজেপি নেতার কথায়, 'এই সব প্রমাণের আবহে হিন্দুরা ক্রমেই দাবি জানাচ্ছে, আইনি পথে হেঁটে এই স্থাপত্যের পুরনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হোক। একটি স্বচ্ছ বিচারবিভাগীয় তদন্ত এই বিতর্ক থামাতে সাহায্য করবে। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই হিন্দুরা তাদের অধিকার ফিরে পেতে পারে এবং এই স্থাপত্যের আসল রূপ ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। ভারতের মিশ্র সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের প্রতি ন্যায়বিচার এবং সম্মান নিশ্চিত করার জন্য আইনি প্রচেষ্টা অপরিহার্য।' (আরও পড়ুন: অসমে তৃণমূল কি নয়া সভাপতি নিয়োগ করল? পোস্ট করেও মোছা হল... ছড়াল বিভ্রান্তি!)
আরও পড়ুন: মমতা কি INDIA ব্লককে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য? 'অধিকার' নিয় বড় কথা বললেন শরদ পাওয়ার
এই মসজিদে পুজো করতে দেওয়ার দাবি তুলে তিনি বলেন, 'হিন্দুদের তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের জন্যে এই কাঠামোর ভিতরে পুজো করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। সেটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি পদক্ষেপ হবে। এই সাইটে উপাসনার অনুমতি দিলে এর ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সম্মান জানানো হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিচয়কে সম্মান করার এবং ঐতিহাসিক অবিচারকে স্বীকার করার জন্য একটি নজির স্থাপন করবে।' (আরও পড়ুন: ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায় USA, অভিযোগ করে BJP, জবাবে মার্কিন দূতাবাস বলল...)
তরুণজ্যোতি তিওয়ারি নিজের পোস্টে আরও লেখেন, 'আদিনা মসজিদ স্থাপত্যের সৌধ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। তবে ভারতের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ধ্বংসের প্রতীক এটি। একটি হিন্দু মন্দির থেকে একটি মসজিদে এর রূপান্তর করা হয়। মধ্যযুগীয় ভারতে ইসলামি সম্প্রসারণের সময়কালে সংঘটিত আগ্রাসন এবং ধ্বংসকে প্রতিফলিত করে এটি। মূল মন্দিরটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করে এর একটি নতুন ধর্মীয় পরিচয় আরোপ করা হত সেই যুগে। এভাবে সেই সময় হিন্দু ঐতিহ্য এবং উপাসনালয়গুলিকে পদ্ধতিগতভাবে মুছে ফেলা হত। সেই বিষয়টি তুলে ধরে এই আদিনা মসজিদ।'