একুশের নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই বিজেপির অন্দরে কোন্দল চরমে উঠেছে। নীচুতলার ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে উপরতলায়। স্বয়ং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ঘেরাও থেকে বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয়েছে। এবার নীচুতলার কর্মীদের বিরোধী–স্বরকে দমন করতে মারের পথকেই হাতিয়ার করল গেরুয়া শিবির। সাংগঠনিক বৈঠকে নেতা–কর্মীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে হাওড়ায়।
ঠিক কী ঘটেছে বৈঠকে? জানা গিয়েছে, বুধবার উত্তর হাওড়ার সালকিয়ায় একটি প্রেক্ষাগৃহে সাংগঠনিক বৈঠকের আয়োজন করে বিজেপি। সেখানে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে সরব হন বেশ কয়েকজন কর্মী। আর তখনই প্রেক্ষাগৃহের দরজা বন্ধ করে এক নেতা ও তিন কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার জেরে জখম হন চারজনই। তার মধ্যে আশঙ্কাজনক একজন।
এই তুমুল মারপিটের জেরে বিশ্বনাথ মোদক নামে এক গেরুয়া কর্মী মারাত্মক জখম হন। তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এমনকী পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, আহত কর্মীরা নেতাদের বিরুদ্ধে গোলাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে আরও পরিস্থিতি সরগরম হযে ওঠে। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, সালকিয়ার নন্দীবাগানের একটি প্রেক্ষাগৃহে যে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে গোপন আঁতাঁত করা কয়েকজন বিজেপি কর্মী বৈঠক ভেস্তে দিতে চেয়েছিল। এটা অবশ্য বিজেপির দাবি। এখানে উত্তর হাওড়ার যুব মোর্চা সভাপতি রাজু দাস এবং কয়েকজন কর্মী রাজ্য এবং জেলা নেতাদের কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন। অভিযোগ, তখনই দলীয় নেতা–কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওই চারজনের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকেন।
হাওড়া বিজেপি সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহার পাল্টা অভিযোগ, রাজু দাস দলবল নিয়ে গণ্ডগোল পাকিয়ে বিজেপির বৈঠক বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। ওঁর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আঁতাঁত রয়েছে। ওঁকে যুব মোর্চার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।