হাতে সময় অত্যন্ত কম। ৩১ ডিসেম্বর শেষ সময়। তার মধ্যে করতে হবে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহ। এটাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ–সফরে এসে টার্গেট বেঁধে দিয়ে গিয়ে ছিলেন। তারপর নানা চেষ্টা করেও দেখা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক সংখ্যায় পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। আসলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিধানসভা থেকে হার শুরু হয়েছে বিজেপির। শেষ হয়েছে উপনির্বাচন দিয়ে। তাই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সাড়া মিলছে না। জেলায় জেলায় সদস্য সংগ্রহের যে টার্গেট দেওয়া হয়েছিল সেটার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। তাই এবার সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণে রীতিমতো পুরষ্কারের টোপ দেওয়া হল বলে অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে।
এই সদস্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে কিছুদিন আগে বিধায়ক–সাংসদদের গাফিলতি নিয়ে কড়া ধমক দিয়েছিলেন সংগঠনের শীর্ষ নেতা সুনীল বনসল। সেই ধমক খেতে হয়েছিল বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের। তাই চাপ বাড়তে থাকে। এই আবহে সদস্য সংগ্রহে আর্থিক পুরষ্কার ঘোষণা করে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বলে অভিযোগ। বিধায়ক নিজের ফেসবুক পোস্টে পুরষ্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কটাক্ষও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের সব বড় শহরে বিগ বাজার হবে’, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উপকার হবে ঘোষণা মমতার
বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গেলেও ৭৭টি আসন ছিল বিজেপির। সেটা এখন নেমে এসেছে ৬৬। তারপর পঞ্চায়েত, পুরসভা, লোকসভা, উপনির্বাচন এমনকী সমবায় নির্বাচনেও গোহারা হেরেছে বিজেপি। বাঁকুড়া বিধানসভায় যে সংখ্যক সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল সেটা এখনও স্পর্শ করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। আর তাই চিন্তায় ঘুম উড়েছে নেতাদের একাংশের। কারণ সদস্য সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হলে রাজ্য নেতৃত্বের থেকে ‘ধমক’ আবার খেতে হবে। তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে নানা কৌশল নিয়েছেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বলে অভিযোগ।
বিজেপির এই বিধায়ক ফেসবুক পোস্টে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভার প্রত্যেক পদাধিকারী, শক্তি কেন্দ্র প্রমূখ এবং সদস্যদের প্রত্যেককে ১০০টি করে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে পদ হারাতেও হতে পারে তাঁদের। ৩০ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে যে নেতারা ১৫০ জন সদস্য সংগ্রহ করবেন, তাঁদের একটি করে মোদী জ্যাকেট এবং যে বুথ সভাপতিরা ৭৫টি করে সদস্য সংগ্রহ করবেন, তাঁদের প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে দেওয়া হবে। এই পুরষ্কারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও বিধায়কের সাফাই, দলের কর্মীদের উৎসাহ দিতেই ওই পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে।