প্রবল বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। জোর কদমে চলছে উদ্ধার কাজ। ঠিক সেই সময়ই রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠল জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায়। সোমবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলার মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খগেন মুর্মুকে। শঙ্কর ঘোষও আহত হয়েছেন। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলার পেছনে রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত, উত্তরবঙ্গে শমীক, রাজ্য সরকারকে তোপ
জানা যাচ্ছে, নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সাংসদ ও বিধায়ক গাড়িতে করে বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন। হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় গাড়ির কাচ, লাঠি ও বাটাম দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাংসদ খগেন মুর্মু রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়ির ভেতরেই লুটিয়ে পড়েন। তাঁর পাঞ্জাবী রক্তে ভিজে যায়। পরে স্থানীয়রা এবং নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও গুরুতর আঘাত পান। তিনি জানিয়েছেন, গাড়ির কাচ ভেঙে দিয়েছে, বাটাম দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
শঙ্কর ঘোষের পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, সাংসদ খগেন মুর্মু গাড়ির ভেতরে বসে আছেন, গায়ে রক্তের দাগ, কাচ ভাঙা, গাড়ি প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই তা ভাইরাল হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, বন্যা পরিস্থিতিকে ঘিরে মানবিকতার সময়েও তৃণমূল ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধের’ পথে হাঁটছে।
বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, এই সময় দলমত ভুলে মানুষের পাশে থাকার কথা। অথচ তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সাংসদকে মেরে ফেলার মতো করে হামলা চালিয়েছে। এটা রাজনীতির চরম অধঃপতন। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, তিনি এমন কোনও ঘটনার কথা জানেন না। সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। সবকিছুর দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপানো বন্ধ করা উচিত।তবে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতেও পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা সময় লাগে বলে জানা গিয়েছে।