তাঁকে দেশনায়ক বলা হয়। তাঁর নীতি–আদর্শ মেনে চলার চেষ্টা করেন ভারতের ৮ থেকে ৮০ জনগণ। সেখানে তাঁর জন্মস্থান নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হলে বিতর্ক দানা বাঁধবে এটাই স্বাভাবিক। যাঁর নামে ব্রিটিশ সরকারের হৃদয় কেঁপে উঠত তাঁর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক বাড়ালেন বিরোধী দলনেতা। হ্যাঁ, তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মভূমি সোনারপুর বলে বিতর্কে জড়ালেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
এই মন্তব্য নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিরোধী দলনেতা কি জানেন না নেতাজির জন্মস্থান? নাকি ভুলে গিয়েছেন তিনি? আবার ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। রবিবার সোনারপুরের ঢালাই ব্রিজ থেকে রাজপুর হয়ে সোনারপুর স্টেশন পর্যন্ত একটি পদযাত্রা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর সেখানে একটি পথসভাও করেন তিনি। সেখানেই তিনি নেতাজির জন্মস্থান নিয়ে বারবার বিতর্কিত মন্তব্য করে থাকেন। আজ, সোমবার এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু? এখানে তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা। আর তা করতেই গিয়েই করে ফেলেন বিতর্কিত মন্তব্য। আর সেখানে তিনি বলেন, ’সোনারপুর হল নেতাজির জন্মস্থান। এটি নেতাজির পুণ্যভূমি। আর তাই মানুষ সোনারপুরকে শ্রদ্ধা করে। অথচ এখন সোনারপুরের বদনাম করছে তৃণমূল।’ শুভেন্দু যখন মঞ্চে এই কথা বলছেন তখন নীচে বিজেপির কর্মীদের একাংশের মধ্যে ফিসফাস শুরু হয়ে যায়। কয়েকজন মহিলা বিজেপি কর্মীকে বলতেও শোনা গেল, সোনারপুরে নেতাজির জন্ম নয়। তাঁর জন্মস্থান ওডিশার কটকে। এটা ঠিক যে, সোনারপুরের সুভাষগ্রামের কাছে কোদালিয়ায় সুভাষচন্দ্রের পৈতৃক বাড়ি আছে। কিন্তু এদিন একাধিকবার সোনারপুরকেই নেতাজির জন্মস্থান বলে মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী।
ঠিক কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘বিজেপি দলটা ভারতবর্ষের ইতিহাসই মুছে দিতে চাইছে। ইতিহাসকে বিকৃত করতে ওদের জুড়ি মেলা ভার। ওরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশ পরিচয় জানে না। কিন্তু বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে জানে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণার দাবি করছি। সেটা ওরা মানছে না। অথচ সেই দলের বিরোধী দলনেতা এমন মন্তব্য করবেন সেটাই স্বাভাবিক।’