কিছুদিন আগে সুকান্ত বনাম শুভেন্দু কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। আর তা নিয়ে অস্বস্তি চরমে উঠেছিল। আদি–নব্যের দ্বন্দ্ব বিজেপিতে লেগেই আছে। সেটা দিলীপ ঘোষের কথা শুনলেই বোঝা যায়। সম্প্রতি জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের একটি ফেসবুক পোস্ট আরও গোষ্ঠীকোন্দল বাড়িয়ে দিয়েছিল। কারণ নিয়োগ দুর্নীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীর নাম সামনে এসেছে। সেটি নিয়েই খোঁচা দিয়েছিলেন জগন্নাথ। তার জেরে আইনি নোটিশ পর্যন্ত পেতে হয়েছে তাঁকে। এবার বিরোধী দলনেতার খাসতালুকে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের দলীয় কোন্দল একেবারে কলতলার ঝগড়ায় চলে আসায় এখন আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সংগঠন। আর সেটা ঘটেছে সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের মধ্যে।
এদিকে হলদিয়ায় ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের (বিএমএস) সমাবেশে আমন্ত্রণ পেলেন না হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। আর এই সমাবেশ থেকেই তাপসী মণ্ডলকে কড়া আক্রমণ করলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যে সাংসদকে এখানে জেতাতে দিনরাত এক করে দিয়েছিলেন তাপসী মণ্ডল আজ তাঁকেই নাম না করে কাঠগড়ায় তুললেন একদা বিচারপতি অধুনা সাংসদ। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখানে এসে সরাসরি সুর সপ্তমে চড়িয়ে বলেন, ‘কেউ কেউ এখান থেকে ভাঙিয়ে অন্য সংগঠন করছেন।’ তারপরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলও। তাঁর বক্তব্য, ‘হলদিয়া সম্পর্কে সাংসদ কিছুই জানেন না।’
আরও পড়ুন: বেসরকারি বাসের নতুন রুট চালু হয়ে গেল, কোথা থেকে কোথায় পৌঁছনো যাবে? জানুন
অন্যদিকে রবিবার হলদিয়ার টাউনশিপে বন্দরের বিবি ঘোষ অডিটোরিয়ামে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের (বিএমএস) একটি সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশের আমন্ত্রণপত্রে নাম ছিল জেলার দুই বিজেপি সংসদ সদস্য অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌমেন্দু অধিকারীর। প্রাক্তন সাংসদ তমলুক দিব্যেন্দু অধিকারীরও নাম ছিল। কিন্তু ছিল না বিধায়ক এবং জেলা সভাপতির নাম। এখান থেকেই গোষ্ঠীকোন্দলের সূত্রপাত। কারণ বিজেপি তমলুকের সাংসদের অভিযোগ, ‘বিএমএসের ওপর যাঁরা নির্ভর করেন, তাঁদেরকে ভেঙে বিজেএমসি’তে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আমাদেরই দলের দু’একজন নেতাস্তরের লোক তা করেছে। সেটা করতে বারণ করেছি। আমি বলেছি, আপনারা এঁদের দ্বারা প্রতারিত হবেন না। ওটা প্রতারণামূলক সংগঠন।’
হলদিয়া–সহ পূর্ব মেদিনীপুরের সংগঠনে যাঁর বিশেষ নাম রয়েছে তিনি হলেন শ্যামল মাইতি। যাঁকে শাসক–বিরোধী সবস্তরের নেতারাই শ্রদ্ধা করেন। কারণ তিনি দক্ষ সংগঠক এবং বারবার সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপসী মণ্ডল। এঁরা দু’জনেই সিপিএমে ছিলেন। এখন বিজেপিতে। আর সাংসদের মন্তব্য শোনার পর বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের কথায়, ‘যে কোনও শ্রমিকের স্বাধীনতা আছে, যে কোনও ধরনের সংগঠন করার। আর এমপি মহাশয় হলদিয়া সম্পর্কে এখনও সব কিছু জানেন না। হলদিয়ার কেমন পরিবেশ তা জানেন না। উনি নতুন এসেছেন, ধীরে ধীরে জানবেন। বিধায়ক হিসাবে আমি কখনও কোনও শ্রমিক সংগঠন করিনি।’ এবার গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তমলুক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ সরকার বলেছেন, ‘আমরা একটা জিনিসই এখানে দেখতে পাচ্ছি, হলদিয়াতে টাকা কীভাবে লুঠ করা যায় তার প্রতিযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।’