মিঠুন চক্রবর্তীকে মাঠে নামিয়েও দলের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ রোখা গেল না। বরং তা প্রকাশ্যে চলে আসায় বিজেপির অস্বস্তি বাড়ল চরমে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার। বৈঠক শেষে বেরতেই তাঁকে দেখে উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। আর এই স্লোগান দিয়েছেন বিজেপিরই এক কর্মী! তাঁর নাম দীপক চক্রবর্তী। এই অবস্থায় মেজাজ হারালেন সুভাষ সরকার। স্লোগান দেওয়া ওই ব্যক্তিকে বাকি কর্মী–সমর্থকরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। সবমিলিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েন সুকান্ত–মিঠুন।
ঠিক কী ঘটেছে সুভাষের সঙ্গে? এখন জেলা সফরে বেরিয়েছেন মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁকেই তরুপের তাস করে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় তিনি গিয়ে দলের সংগঠন বোঝার চেষ্টা করছেন। তাই বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের দুর্লভপুর মোড়ের একটি বেসরকারি লজে বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানে ছিলেন সুভাষ সরকার। এই বৈঠক শেষে তাঁরা বাইরে বেরোতেই সুভাষ সরকারকে লক্ষ্য করে ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান দেন দীপক। তখন কয়েকজন দীপককে মাটিতে ফেলে চড় মারেন। আঙুল উঁচিয়ে দীপককে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে এই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও।
কী বলছে বিজেপি এবং দীপক? এই ঘটনার পর বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসই চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। দীপক চক্রবর্তী বিজেপির কর্মীই নন বলে দাবি করেছেন সুভাষ সরকার। তাঁকে মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। তবে তৃণমূল কংগ্রেসেরও পাল্টা দাবি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘাসফুলের কোনও সম্পর্ক নেই। এই ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমে দীপক চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি আগেও বিজেপি কর্মী ছিলাম। এখনও বিজেপি কর্মীই আছি। সুভাষ সরকারকে জেতাতে অনেক খেটেছি। কিন্তু জেতার পর সুভাষ এলাকার জন্য কোনও কাজ করেননি। তিনি যাতে এই এলাকায় দ্বিতীয়বার না আসেন, তাই গো–ব্যাক স্লোগান দিয়েছি।’
আর সুভা্য সরকার কী বলছেন? এই ঘটনায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। সেখানে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ওই লোকটা বিজেপির কেউ নন। দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই। তৃণমূলই ওঁকে মদ খাইয়ে এখানে পাঠিয়েছিল। ওই ব্যক্তি এখানে এসে চিৎকার করছিলেন, তাতে রেগে গিয়েছিলেন আমাদের কর্মীরা। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি। তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছে।’ সুভাষের মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গঙ্গাজলঘাটি দু’নম্বর ব্লকের সভাপতি নিমাই মাজি বলেন, ‘সাংসদ হিসাবে সুভাষ সরকার এবং বিধায়ক হিসাবে চন্দনা বাউড়ি চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাই বিজেপির কর্মীরা সাংসদকে গো–ব্যাক স্লোগান দিয়েছেন বলে শুনেছি। দীপক চক্রবর্তী তৃণমূলের কেউ নন।’