বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > ‘‌সব পাল্টে দেব আমরা, হিম্মত নেই আটকে রাখার’‌, ভারত নাম নিয়ে হুঙ্কার দিলীপের‌

‘‌সব পাল্টে দেব আমরা, হিম্মত নেই আটকে রাখার’‌, ভারত নাম নিয়ে হুঙ্কার দিলীপের‌

দিলীপ ঘোষ।

জি–২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সামনের ফলকে দেশের নাম হিসেবে লেখা ছিল ভারত। দেশের নাম নিয়ে বিতর্কে নিজের অবস্থান বোঝাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত লেখা ফলক ব্যবহার করেন। হিন্দু রাষ্ট্রের বার্তা দিতেই এমন করা হয়েছে বলে উঠছে অভিযোগ। এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

দেশের নাম ভারত রাখা নিয়ে সর্বত্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। জি–২০ শীর্ষ সম্মেলনে দেখা গেল, প্রধানমন্ত্রীর সামনে রাখা ফলকে ভারত লেখা। এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আর তার মধ্যেই হুমকি দিয়ে বিতর্ক তৈরি করলেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। আজ, রবিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই হুমকি দেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‌ইন্ডিয়া নয়, দেশের নাম শুধুমাত্র ভারত রাখা হবে। যাঁর বা যাঁদের পছন্দ হবে না, তাঁরা বাইরে চলে যেতে পারেন। সব পাল্টে যাচ্ছে যেমন, দেশের নামও পাল্টে যাবে। কারও আটকানোর ক্ষমতা নেই।’‌ এবার এই মন্তব্যের জেরে বিতর্ক দানা বাঁধল রাজ্য–রাজনীতিতে।

এদিকে জি–২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সামনের ফলকে দেশের নাম হিসেবে লেখা ছিল ভারত। দেশের নাম নিয়ে বিতর্কে নিজের অবস্থান বোঝাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত লেখা ফলক ব্যবহার করেন। তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। বিদেশের রাষ্ট্রনায়ক এবং কূটনীতিকদের সামনে হিন্দু রাষ্ট্রের বার্তা দিতেই এমন করা হয়েছে বলে উঠছে অভিযোগ। এবার সেই আবহে দেশের নাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষ। আজ খড়গপুরে চায়ে পে চর্চায় যোগ দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌সব পাল্টাচ্ছে, পাল্টে দেব আমরা। কারও হিম্মত নেই আটকে রাখার। ইন্ডিয়া পাল্টে ভারত হবে। যার পছন্দ হবে না, বাইরে যাবে। যে ইন্ডিয়া খুঁজবে, ব্রিটেনে গিয়ে খোঁজো, যেখানে ইন্ডিয়া হাউজ আছে। যেখানে সাভারকার থাকতেন। ভারতে কোনও ইন্ডিয়া থাকবে না।’‌

আর কী সাফাই দেন দিলীপ?‌ অন্যদিকে নিজের দাবির সপক্ষে সাফাইও দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। দিলীপ ঘোষের সাফাই, ‘‌যাঁরা আজ বিরোধিতা করছে তাঁরা বলুন, মাদ্রাজকে চেন্নাই করা হল কেন? ভারতের বেশির ভাগ বড় শহরের নাম পাল্টে গিয়েছে। ঔরঙ্গাবাদ হয়েছে সম্ভাজিরাও। ব্রিটিশ, পর্তুগিজ, মুঘলরা এক হাজার বছর দেশকে পরাজিত করে রেখেছিল। তাদের কোনও চিহ্ন থাকবে না ভারতে। হিম্মত থাকলে আটকে দেখান। কলকাতার রাস্তায় বহু ব্রিটিশদের মূর্তি ছিল। এখন কটা আছে। যে দু’‌একটা এখনও রয়েছে, সব তুলে উপড়ে ফেলব। খালি বিজেপি ক্ষমতায় আসুক। রাস্তায় গোলামির চিহ্ন থাকবে না। সকালে উঠে বিদেশিদের মুখ দেখবে আমাদের ছেলেমেয়েরা! চলবে না।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আপনি একবার কলকাতায় আসুন’‌, শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানালেন মমতা

আর কে, কি বলছেন?‌ এই মন্তব্যের পরই দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‌দলের মধ্যে কল্কে না পেয়ে দিলীপ ঘোষ বাইরে এসব বলছেন। যাতে ওঁর নাম ছাপে। বিপজ্জনক মনোভাব। ভারতীয়ত্বের সঙ্গে ওঁর মনোভাবের কোনও মিল নেই। ভারতের একটা ইতিহাস, ঐতিহ্য, পরম্পরা রয়েছে। যে এসব বোঝে না, সেই এমন কথা বলে। সংবিধান এখনও পাল্টায়নি। অথচ প্রেসিডেন্ট অফ ভারত, প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত লেখা হচ্ছে, এটা বেআইনি। কারণ সংবিধানে এমন কিছু বলা নেই।’‌ এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‌ইন্ডিয়া এবং ভারত, দুই নামেই পরিচিত দেশ। একটি কেটে, অন্যটি রাখতে হবে, এসব অর্থহীন। বিরোধী জোটের নাম হয়েছে ইন্ডিয়া বলেই এমন উদ্যোগ। ভয়ে ভারত ভারত করছে। নাম নিয়ে কোনও বিতর্কই নেই। সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। অর্থহীন কথা বলছেন দিলীপ।’‌

বন্ধ করুন