পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কাশ্মীরে পাক সেনার গুলিতে নিহত জওয়ান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্যে বিজেপি সাংসদকে আটকানো নিয়ে টুইটারে সরব হলেন তিনি। পরপর তিনটি টুইটে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছেন, এমন একটি অনুষ্ঠানে যেখানে শাসকদলের সাংসদ অতিথি সেখানে বিরোধীদলের সাংসদকে চোখ রাঙানো হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন গণতন্ত্রকে লজ্জিত করেছে।
রবিবার রাতে সুবোধ ঘোষের নিথর দেহ ফেরে নদিয়ার রঘুনাথপুরের বাড়িতে। বাড়ি থেকে ১ কিমি দূরে স্কুলমাঠে অস্থায়ী মঞ্চে শ্রদ্ধা জানান পরিবারের সদস্য, গ্রামবাসী থেকে শুরু করে এলাকার বিধায়ক, সাংসদ, পুলিশ–প্রশাসনের লোকজন। আর সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাঁর অভিযোগ, ‘পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। এ তার নিদর্শন। রাজ্যে এক অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। সংবিধানকে সর্বত্র লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এক সাংসদ সসম্মানে অনুষ্ঠানে রয়েছেন কিন্তু আর এক সাংসদকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না।’ যদিও পরে তিনি নিহত জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
আর মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা নিয়ে আওয়াজ তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালের টুইট, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন এই প্রশাসনে পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বলে কিছুই নেই। পলাশি শ্মশানে নিহত জওয়ান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্যে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে পুলিশ যে আচরণ করেছে সে সম্পর্কে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে রিপোর্ট চাইছি। এতে নদিয়ার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের কর্তব্যে গাফিলতি সামনে এসেছে।’
তাঁর আরও অভিযোগ, ‘গণতন্ত্রকে লজ্জিত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। ওই অনুষ্ঠানে যেখানে শাসকদলের সাংসদ অতিথি, সেখানেই বিরোধীদলের সাংসদকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রকে বাঁচানোর স্বার্থে উর্দিধারী পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এই অপরাধের দৃষ্ঠান্তমূলক পরিণতি হওয়া উচিত। সরকারি কর্মচারীরা যদি রাজনৈতিকভাবে কাজ করে তবে তাদের আইনের কোপে পড়তেই হবে।’
একইসঙ্গে এদিন রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে উদ্দেশ্য করে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘রাজ্যের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া নিয়ে কীরকম বাধ্যবাধকতা রয়েছে সে ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। কিন্তু প্রশাসনের কোনও উর্দীধারী যদি এ ধরণের সীমালঙ্ঘন করে তা দেখলে চমৎকৃত হবে।’ টুইটের সঙ্গে এদিন তিনটি ভিডিও আপলোড করেন রাজ্যপাল। তাতে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের বাদানুবাদ হতে দেখা গিয়েছে।