জিটিএ নির্বাচনের প্রতিবাদে অনশনে বসেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। রবিবার অনশন মঞ্চে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্ত। সঙ্গে ছিলেন আরেক সাংসদ জন বার্লাও। এরপর বিকেলের দিকে বিমল গুরুঙের অনশন প্রত্যাহারের কথা জানা যায়। যদিও এই বিষয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি বিজেপি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ফের পরস্পর কাছে আসছে? ফের কি তাহলে পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ দেখা দিচ্ছে?
পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং জানিয়েছিলেন, তিনি জিটিএ নির্বাচন চান না। আগে পাহাড়ে রাজনৈতিক সমাধান হোক। নির্বাচনের প্রতিবাদে অনশনে বসেন তিনি। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির পরই বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত জানিয়ে দেন, ‘সর্বশক্তি দিয়ে এই নির্বাচন রুখব।’ গত লোকসভা ভোটের সময়ে দার্জিলিং আসনটি যে বিজেপি জিতেছিল, তাতে বিজেপির বড় ভূমিকা ছিল। গুরুঙের অনশনে বসাকে কেন্দ্র করে ফের পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও বিজেপির কাছাকাছি আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ, দুই দলের নেতাই একই সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন। এদিন বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজু বিস্ত। এর আগে রাজু বিস্ত গুরুংকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, একজন বিজেপি সাংসদ হিসাবে নয়, গোর্খা হিসাবে গুরুঙের আন্দোলনের পাশে তিনি রয়েছেন। দিল্লিকে তিনি যে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দেবেন, সেকথাও বলেছিলেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও জানিয়েছিলেন, পাহাড়ে গোর্খা সমাজের যে আবেগ রয়েছে, তাকে মর্যাদা না দিয়ে জিটিএ নির্বাচন করা ঠিক হবে না। পাহাড়ের মানুষ জিটিএ নিয়ে খুশি নয়। পাহাড়ের মানুষের আবেগকে মর্যাদা দেওয়া উচিত।
ইতিমধ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে পাহাড়ের রাজনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। দার্জিলিং পুরসভা হমরো পার্টির দখলে গেছে। সেইসঙ্গে পাহাড়ের মাটিতে অনীত থাপার নতুন দল আত্মপ্রকাশ করেছে। দার্জিলিঙের বুকে তৃণমূলও নিজের প্রভাব অল্প হলেও বিস্তার করতে শুরু করেছে। এক সময় বিমল গুরুঙের ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাঙ এখন তৃণমূলে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জনভিত্তি ঠিক কোনও জায়গায় রয়েছে, সেটা দেখে নেওয়া প্রয়োজন বিমল গুরুঙ শিবিরের। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির সঙ্গে কি নতুন করে পথ চলা শুরু করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, সেটাই এখন দেখার।